শুধু রসনাবিলাস নয়, খাওয়াকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ভাবনা বরাবরই ছিল, আছে বাঙালির চিন্তায় ও রুচিতে। খাওয়ার পদবৈচিত্র্য তাই এ জনপদজুড়ে। এবার সিলেটের সাতকড়ার কথা জানাচ্ছেন খলিলুর রহমান
ফলটির প্রকৃত নাম ‘সাতকড়া’। আকারে জাম্বুরার চেয়ে একটু ছোট। তবে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় এ ফলকে ‘হাতকড়া’ নামে ডাকা হয়। বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বেও রয়েছে সাতকড়ার কদর।
টক-মিষ্টি স্বাদের ছোট, মাঝারি ও বড় ধরনের সাতকড়া সিলেটের বাজারে পাওয়া যায়। গরুর গোশতের পাশাপাশি ছোট মাছ ও কচুশাক দিয়েও খাওয়া যায় এটি। বর্তমানে সিলেটের বাজারে কাচের বোতলে সাতকড়ার আচার বিক্রি হয়। সিলেটে বেড়াতে পর্যটকের কাছে কাঁচা সাতকড়ার চেয়ে বোতলের আচারের কদরই বেশি।
বর্তমানে সিলেটের জৈন্তাপুর, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ছাতক, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও টিলা এলাকায় সাতকড়ার গাছ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি সাতকড়া চাষ হয় সিলেটের পাহাড়ি এলাকায়। সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট এলাকার মাটি এ ফল চাষের জন্য সবচেয়ে উর্বর।
সাতকড়ার রেসিপি
বেশ কয়েকজন ভালো রাঁধুনীর সঙ্গে কথা
বলে সাতকড়ার রেসিপি সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া গেছে।
উপকরণ
গরুর মাংস এক কেজি, সাতকড়া ফালি করা চার-পাঁচ টুকরো, লবণ আন্দাজমতো, আদাবাটা এক টেবিল চামচ, রসুনবাটা এক চা চামচ, কাটা পেঁয়াজ দুই কাপ, হলুদের গুঁড়ো আধা চা চামচ, মরিচের গুঁড়ো ঝাল অনুযায়ী, জিরার গুঁড়ো আধা চা চামচ, তেজপাতা দুটি, গরম মশলা (এলাচ, দারুচিনি) তিন-চারটি, সয়াবিন তেল তিন-চার কাপ, গোলমরিচ সাত-আটটি ও কাঁচামরিচ চার-পাঁচটি।
প্রণালি
প্রথমে মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এরপর সাতকড়া, কাঁচামরিচ ও গোলমরিচ বাদে সব উপকরণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে কিছু সময় রেখে দিন। মাখানো মাংস কড়া আঁচে চুলায় বসিয়ে দিন। মাংসের পানি বের হলে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। মাংস পানি দিয়ে সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত মাঝেমধ্যে নেড়ে দিতে থাকুন। এবার একটি সাতকড়া ফালি করে কেটে নিন। মাংস ৭০ ভাগ সেদ্ধ হয়ে গেলে সাতকড়াটি মেশান। রান্নার শেষ পর্যায়ে কাঁচামরিচ ও গোলমরিচ দিয়ে কিছু সময় রেখে নামিয়ে নিন। ভাত, পোলাও বা খিচুড়ি দিয়ে খেতে পারেন এ খাবার।
খেয়াল রাখবেন
সাতকড়া কেনার সময় পাতলা দেখে কিনবেন। পাতলা সাতকড়া তেতো হয় না। আর তেতো সাতকড়া হলে একটি ডেকচিতে পানি ফুটিয়ে সাতকড়া দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। পরে পানি ফেলে দিলে তেতো ভাব চলে যাবে। হ
Add Comment