নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাসে সৃষ্টি লকডাউন ও ঈদ যাত্রায় প্রাইভেট গাড়ির চাহিতা থাকায় যাত্রী পরিবহনে কূট কৌশল অবলম্বন করছে চট্টগ্রামের রেন্টকার চালকরা। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিলেও এসব চালকরা গণপরিবহন বানিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে।

গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সিটি গেইট এলাকায় জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোট অভিযান পরিচালনা এমন তথ্য উঠে আসে। মূলত প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিক-আপ ভ্যানে করে কৌশলে লোকজন চট্টগ্রাম শহর ছাড়া প্রতিরোধে সিটি গেইট এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।
এসময় প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসকে গণপরিবহন বানিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী যাওয়ার প্রচেষ্টার সময় ছয়টি প্রাইভেট কার এবং দুই’টি মাইক্রোবাস জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলামের নিকট হাতেনাতে ধরা পড়ে। এসময় ৬ জন ড্রাইভারকে ব্যক্তিগত আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ছয়টি প্রাইভেট কারই অন্য মালিকের কাছ থেকে ধার নিয়ে কৌশলে যাত্রী গণহারে পরিবহন করছিল চালকরা।

এরপর সিটি গেইটে ট্রাফিক পুলিশসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় কালো গ্লাসযুক্ত দুটি মাইক্রোবাস গণযাত্রী পরিবহণের দায়ে চেকপোস্টে ধরা পড়ে। ছয়টি টি প্রাইভেট কার এবং দুই টি মাইক্রোবাসের সকল যাত্রীকে তাদের চট্টগ্রামের নিজ বাসায় ফেরত পাঠানো হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম শেয়ারবিজকে বলেন, যাত্রীরা সিটি গেইটের চেকপোস্ট পর্যন্ত হেঁটে যায়। এসময় গাড়ি বা মাইক্রোবাসগুলোও ফাঁকা থাকে। সিটি গেইটের ট্রাফিক পুলিশ গেইট অতিক্রম করে আনুমানিক ৩০০-৪০০ গজ পরে যাত্রীরা প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাসে এমনকি পিক-আপ গাড়িতে কৌশলে উঠে পড়ে। তবে জরুরী প্রয়োজনে সামাকিজ দূরত্ব মেনে ব্যাক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

অপরদিকে, শনিবার (২৩ মে) বিকেল ৫টায় বাকলিয়ার শাহ আমানত কর্ণফুলী ব্রীজের উপর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেন।
এসময় চট্টগ্রাম শহর ছেড়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাসহ বান্দরবান এবং কক্সবাজার অভিমুখী প্রায় ১৫টি মোটরবাইকের চাবি জব্দ করা হয়। মোটরবাইকের যাত্রী এবং চালকদের কে নিজ নিজ বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
আজকের অভিযান পরিচালনার সময় একটি মাইক্রোবাস আটক করা হয়। মাইক্রোবাসের গায়ে ইমারজেন্সি রোগী স্টিকার লাগানো ছিলো। কিন্তু পুলিশ দিয়ে মাইক্রোবাসটি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তল্লাশি করে দেখেন মাইক্রোবাসের মধ্যে সবাই যাত্রী।
শাহ আমানত ব্রীজের প্রথমে ট্রাফিক পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে মাইক্রোবাসটি শাহ আমানত ব্রীজের মাঝপথে আসলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলামের নিকট মাইক্রোবাস ড্রাইভার এবং যাত্রীদের প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে।
এ অপরাধে ড্রাইভারকে আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মাইক্রোবাসের কক্সবাজার অভিমুখী তিনটি পরিবারের যাত্রীদেরকে চট্টগ্রাম শহরে তাদের নিজ বাসায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।