প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আলী আকবর কারী (৭০) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১১ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। একই মামলায় আরও তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অপর তিনজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মো. জসিম উদ্দিন (৩২), নুর মিয়া (৬৮), সফিকুর রহমান (৫২), মো. তৌহির হোসেন (৩৫) ও মো. রুবেল হোসেন (২৮)।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, মো. জুয়েল (২৯), রাহেলা বেগম (৩৮), মোক্তার হোসেন (৩০)।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, উম্মে হাবিবা, ওসমান কবিরাজ ও মোশারফ হোসেন মশু।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে জুয়েল ও মোক্তার হোসেন ছাড়া বাকী আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে চাঁদপুরের সফিকুর রহমান ছাড়া বাকি রায়পুর উপজেলার বাসিন্দা।
জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বিজ্ঞ আদালত স্বাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ৫ জনের ফাঁসির আদেশ এবং ৩ জনের যাবজ্জীবন ও ৩ জনকে খালাস প্রদান করেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ এবং বাদিপক্ষ সন্তুষ্ট।
বাদি পক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, বাদি পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে।
নিহত আলী আকবরের বড় পুত্র ও মামলার বাদি মো. তহিরুল ইসলাম (৩৯) বলেন, আদালতের দেওয়া রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়, আমরা সে দাবি জানাচ্ছি।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে রায়পুর উপজেলার উত্তর চর বংশী ইউনিয়নের চর বংশী গ্রামের কৃষক আলী আকবর ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৭টা দিকে তার নারিকেল গাছ থেকে ডাব পাড়তে যান। এ সময় পূর্ব বিরোধের জের ধরে অভিযুক্তরা তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওইদিন নিহতের বড় ছেলে তহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে ১০ জনকে আসামী করে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করে। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল পুলিশ এজাহারভূক্ত ১০ জনসহ মোট ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ১৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য নিয়ে তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে এই রায় প্রদান করেন।
এদিকে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মঞ্জুর জিলানী রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।