নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: সোনালী ব্যাংকের প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় এক লবণ ব্যবসায়ীকে সাত বছর করে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। গতকাল চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মীর রহুল আমিন এ রায় দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ রায়ে দণ্ডিত লবণ ব্যবসায়ী রতন কুমার বিশ্বাস কক্সবাজারের মেসার্স আজমির সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক। আর খালাস পাওয়া তিন আসামি হলেন রতন বিশ্বাসের পার্টনার মো. সিরাজউদ্দৌলা এবং সোনালী ব্যাংকের কক্সবাজার সদর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক গোলাম রহমান ও সিনিয়র অফিসার প্রকাশ কান্তি চৌধুরী। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা হয়েছিল। দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আদালত সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। তবে তিনি বর্তমানে পলাতক আছেন। আর তিনজন আসামির বিরুদ্ধে কোনো ধারায় অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে হাজির ছিলেন।
সূত্র মতে, ১৯৯৮ সালে লবণ ব্যবসায়ী রতন বিশ্বাস সোনালী ব্যাংকে জমির দলিল দাখিল করে প্রথম দফায় এক কোটি ৩৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় আট লাখ টাকা ঋণ নেন। পরে দেখা যায় দাখিল করা জমির দলিল ভুয়া। পরস্পরের যোগসাজশে সোনালী ব্যাংক থেকে নেওয়া টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০০ সালের ২৯ জুলাই চারজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়। দুর্নীতি দমন ?ব্যুরোর পরিদর্শক মোবিনুল ইসলাম বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন। ২০০৪ সালের ৩১ জুলাই দুর্নীতি দমন ব্যুরোর পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে দুই মামলায় অভিযোগ গঠন হয়। প্রত্যেক মামলায় ৯ জন করে সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
আদালত প্রথম মামলার রায়ে রতন কুমার বিশ্বাসকে সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি আত্মসাৎ করা এক কোটি ৩৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধের আদেশ দিয়েছেন। জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে আরও এক বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। অন্যদিকে দ্বিতীয় মামলার রায়ে সাত বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি আট লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
