নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিডি ওয়েল্ডিং। কিন্তু এবার কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, এমন ‘গুজব’ চলছে বাজারে। আর এ গুজবে ফের কোম্পানিটির শেয়ারদরে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। এদিকে দর বাড়ার পেছনে কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান।
কোম্পানির লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৩ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দেয়নি। ফলে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়। পরের বছর মাত্র পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উঠে এলেও তা বেশিদিন টেকেনি। পরের বছরই লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়ে কোম্পানিটি ফের ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থান করে নেয়।
বিডি ওয়েল্ডিংয়ের কোম্পানি সচিব সুমন চন্দ্র দেবনাথ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘কী কারণে শেয়ারদর বাড়ছে, তা আমাদের জানা নেই। কোম্পানি লভ্যাংশ দেবে কি না, সেটি পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, কোম্পানিটি ঢাকার অদূরে ধামরাই নতুন কারখানা চালুর চেষ্টা করছে। তাছাড়া কোম্পানির রেজিস্টার্ড অফিস মিরপুরে স্থানান্তর হয়েছে। সব মিলিয়ে কোম্পানিটি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে কী কারণে শেয়ারদর বাড়ছে, সে সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে জানান তারা। তাছাড়া লভ্যাংশের বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
তথ্যমতে, বিডি ওয়েল্ডিংয়ের শেয়ার গতকাল সর্বশেষ ১৮ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার ১৭ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১৮ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠানামা করেছে। এর আগে কোম্পানির শেয়ার গত জুনের শেষ দিকে ২৪ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বেশিরভাগ সময় পতনমুখী ছিল কোম্পানির শেয়ারদর। এতে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বনিম্ন ১৫ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। কয়েকদিন ধরে কোম্পানির শেয়ারে আবারও উল্লম্ফন দেখা গেছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ার সর্বনিম্ন আট টাকা ২০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৪ টাকায় পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে।
পুঁজিবাজারে ১৯৯৯ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৪২ কোটি ৯২ হাজার টাকা। কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা চার কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার ১০৪টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩১ দশমিক শূন্য এক শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে দুই দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
উল্লেখ্য, শেয়ার কারসাজির দায়ে বিডি ওয়েল্ডিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম নুরুল ইসলামকে ২০১৫ সালে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট মামলা নিষ্পত্তির জন্য গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে ২০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।