লাইফ ফান্ডে শীর্ষে ডেল্টা, পিছিয়ে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স

পলাশ শরিফ: পুঁজিবাজারে বিভিন্ন সময়ে বেসরকারি ১২টি জীবন বিমা কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। লাইফ ফান্ডের আকার বিবেচনায় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ‘ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স’। পরপর দুই বছর (২০১৫-১৬) ধরে এ কোম্পানিটি শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে গত বছর (২০১৬) ‘রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স’-এর ফান্ড ছিল সবচেয়ে কম। এর আগের বছর (২০১৫) সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল ‘পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স’।
জানা গেছে, তালিকাভুক্ত জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর পাঁচটি কোম্পানির লাইফ ফান্ডে সর্বনিম্ন দেড় হাজার কোটি টাকা থেকে সর্বোচ্চ পৌনে ৪ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। ওই পাঁচ কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তুলনামূলক পিছিয়ে পড়েছে বাকি সাত কোম্পানি। ওই সাত কোম্পানির লাইফ ফান্ডের টাকার অঙ্ক এক হাজার কোটি টাকার নিচে।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের তথ্য বিশ্লেষণে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। মূলত নিয়ন্ত্রক সংস্থার শাস্তির কারণে বিতর্কের মুখে কোম্পানিগুলোই লাইফ ফান্ডের আকারের দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। তবে অর্থবছর শেষে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে চাননি কোম্পানিগুলোর দায়িত্বশীলরা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির লাইফ ফান্ডের আকার তিন হাজার ৮৬৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা ওই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১৫ সালে কোম্পানিটির লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ১২৬ কোটি নয় লাখ টাকা।
জানতে চাইলে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের জয়েন্ট সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মহিবুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সব ধরনের নিয়মকানুন মেনে ব্যবসা করছে ডেল্টা লাইফ। এছাড়া কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা হয়েছে। ব্যবসা পরিচালনায় কোনো ধরনের চাপ ছিল না। তাই ডেল্টা লাইফ শীর্ষে রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
লাইফ ফান্ডে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ‘ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স’। ১৯৯৫ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির লাইফ ফান্ডের বর্তমান আকার তিন হাজার ৬৮৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। লাইফ ফান্ডের আকারের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ‘ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স’। এক সময়ে কোম্পানিটির ওই তহবিলের আকার দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ১৩৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। তুলনামূলক এগিয়ে থাকা অন্য দুই কোম্পানির মধ্যে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের লাইফ ফান্ডে দুই হাজার ৫৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও মেঘনা লাইফে এক হাজার ৪১৬ কোটি এক লাখ টাকা রয়েছে।
অন্যদিকে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা ও এক হাজার কোটি টাকার নিচে এমন সাত কোম্পানির মধ্যে শুরুতে রয়েছে ‘প্রাইম ইসলামী লাইফ’। কোম্পানিটির লাইফ ফান্ডের আকার ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে ৯৩০ কোটি ২৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এরপরই ‘সন্ধানী লাইফ’। কোম্পানিটির ফান্ডে ৮৩৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা রয়েছে।
অপর কোম্পানি ‘প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স’-এর লাইফ ফান্ডে ৫৯৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা আছে।
এদিকে পিছিয়ে পড়া সাত কোম্পানির মধ্যে ‘রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স’-এর লাইফ ফান্ডের আকার সবচেয়ে ছোট, যা সর্বশেষ দাঁড়িয়েছে ৩৭৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকায়।
এরপর রয়েছে বিতর্কিত ‘পদ্মা ইসলামী লাইফ’। কোম্পানিটির ফান্ডের আকার দাঁড়িয়েছে ৩৯১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। অন্য দুই কোম্পানির মধ্যে ‘প্রগ্রেসিভ লাইফ’-এর ৩৯৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ও ‘সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স’-এর ৪১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা লাইফ ফান্ড রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিমা গ্রাকদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থের একটি অংশ ভবিষ্যতের প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য লাইফ ফান্ডে রাখা হয়। ওই অর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থা নির্দেশিত খাতে বিনিয়োগ করা হয়। কোম্পানির গ্রাহকের বিমা দাবি পরিশোধের সক্ষমতা যাচাইয়ে লাইফ ফান্ড অন্যতম মানদণ্ড হিসেবে কাজ করে। যে কারণে প্রতিষ্ঠার পর থেকে লাইফ ফান্ডের অর্থ ব্যয় নিয়ে কঠোর অবস্থানে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০