প্রতিনিধি, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে স্কুলে এ্যাসাইমেন্ট জমা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে চাঁদের গাড়ির ধাক্কায় দুই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত জীপ চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। ঘটনার পরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ফটিকছড়ি থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান গাড়িটির চালক আলাউদ্দিন। এছাড়াও নাজিরহাট হাইওয়ে পুলিশ থেকে বার্ষিক চার হাজার টাকার ‘টোকেন’ সংগ্রহের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্সবিহীন জীপগাড়িটি চালিয়ে আসছিলেন বলেও জানান তিনি। হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট এর তাড়া খেয়ে মোটরসাইকেলকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে সে।
এর আগে, রোববার রাত পৌনে ১২ টার দিকে নগরীর বায়জিদ থানা এলাকা থেকে তাকে আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আলাউদ্দিন উপজেলার নারায়নহাট ইউনিয়নের উত্তর শৈলকুপা এলাকার রুহুল আমিন ওরফে তনু ফকিরের পুত্র।
ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, ‘নিহত দুই ছাত্রীর মধ্যে নিশু আক্তারের চাচা মোঃ আইয়ুব আলীর করা মামলায় আসামী আলাউদ্দিনকে ধরতে অভিযান চলছিলো। রোববার রাত পৌনে ১২ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে সিএমপির বায়জিদ থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। টোকেনের মাধ্যমে গাড়ি চালানোর সুযোগ দেয়ায় ট্রাফিক পুলিশের টিআই নিখিল চাকমা বরখাস্ত ও সার্জেন্ট আলামিনকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ক্লোজড করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
প্রসঙ্গত, গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এস্যাইমেন্ট জমা দিয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে পেলাগাজি দীঘির সংলগ্ন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিশামনি ও মিশু আকতার নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। পুলিশের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে ওই ছাত্রীদের উপরে গাড়ি তুলে দেয় চালক আলাউদ্দিন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই দুই পুলিশকে ধাওয়া দিলে পুলিশের টিআই নিখিল চাকমা ও সার্জেন্ট আলামিন তাদের মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর অপর একটিতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এসময় প্রায় দুই ঘন্টা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক, ফটিকছড়ি-হেঁয়াকো সড়ক, পেলাগাজি-বারৈয়ারঢালা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। পরে এডিশনাল এসপি শাহাদাত হোসাইন, ফটিকছড়ি নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মহিনুল হাসান, ফটিকছড়ি থানার ওসি রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক জানান, ঘটনার দুই দিন পরই ট্রাফিক পুলিশের টিআই নিখিল চাকমাকে বরখাস্ত ও সার্জেন্ট আলামিনকে ক্লোজড করা হয়েছে।