Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 11:20 pm

লাখ টাকার কম খরচে মালয়েশিয়ায় যাওয়া যাবে: প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক লাখ টাকার কম খরচে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে আশা করছেন বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি জানান, ‘চুক্তি অনুযায়ী কর্মীর আসা-যাওয়ার টিকিটসহ মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন।’

গতকাল দুপুরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, আগে সরকার-নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় এক লাখ ৬০-৬৫ যা-ই থাকুক না কেন, এখন তা থেকে অনেক কমে আসবে। দুই দেশের এজেন্সি যৌথভাবে কাজ করবে। ব্যয়ের বেশিরভাগ খরচই নিয়োগকর্তা বহন করবেন। আগে বিমানভাড়া আমাদের কর্মীরা দিতেন, যার কারণে ওই ব্যয় ছিল। এবার আশা করি, অনেক অনেক কমে যাবে। আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির চার্জ যা-ই হোক, সেটা আমাদের কর্মীদের ওপর পড়বে। মালয়েশিয়ার অংশেরটা নিয়োগকর্তা দেবেন। সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা নেই।

মন্ত্রী বলেন, এখানে কর্মীর খরচ বলতে পাসপোর্ট তৈরি, বিএমইটি ফি, কল্যাণ বোর্ডের সদস্য ফি, মেডিকেল ফি ও রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ডেটাবেজ থেকে কর্মী পাঠানো হবে। পাশাপাশি আগের মতো কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিই কর্মী পাঠাতে পারবে। মালয়েশিয়া যেতে দালালদের টাকা না দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচের মধ্যে রয়েছে রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার উড়োজাহাজ ভাড়া, আবাসন ও কর্মে নিয়োগ। নতুন চুক্তি অনুযায়ী কর্মীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খরচও নিয়োগকর্তা বহন করবেন। নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবেন। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইন্স্যুরেন্স-সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টাইন-সংক্রান্ত খরচসহ সব ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বিমা, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করবেন।

ইমরান আহমদ বলেন, তিন বছর আগে সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এবার সেই সিন্ডিকেট থাকছে না। আর কর্মী পাঠাতে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট, কিংবা গ্রুপিং করার সুযোগ থাকবে না। তবে এবার কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি জড়িত থাকছে, যা আগে ছিল না।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষণ করা মূল লক্ষ্য। যাদের বৈধ রিক্রুটমেন্ট লাইসেন্স আছে শুধু তারাই কর্মী পাঠাতে পারবেন। তবে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। কেউ যেন এখন কারও সঙ্গে টাকা-পয়সা লেনদেন না করেন। যখন প্রক্রিয়া শুরু হবে তখন সরকার জানাবে।

উল্লেখ্য, সিন্ডিকেট আর অনিয়মের অভিযোগে মালয়েশিয়া সরকার ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে স্থগিতাদেশ আরোপ করে। এরপর আবার কর্মী পাঠাতে উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরই ফলে ১৯ ডিসেম্বর কুয়ালালামপুরে সমঝোতা স্মারকে সই করে দুই দেশ।

সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান।