নিজস্ব প্রতিবেদক: বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ ও সময় নির্ধারণ করেছে সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জহোলসিম ববাংলাদেশ লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোম্পানিটির ২২তম এজিএম আগামী ২৩ জুন বেলা আড়াইটায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য ৭ মে সকাল সাড়ে ১০টায় এজিএম অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য তা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৫০ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৯৫ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে তিন টাকা ৫২ পয়সা।
২০১৯ সালে কোম্পানিটির মোট রাজস্ব ছিল ১৭ হাজার ৮৪০ মিলিয়ন টাকা, যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে এক হাজার ২০৮ মিলিয়ন টাকা বেশি। কস্ট অপটিমাইজেশনের ফলে, কর পূর্ববর্তী মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে শতকরা ৪২ ভাগ। কর-পরবর্তী কোম্পানিটির মুনাফা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৩৭ মিলিয়ন টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে শতকরা ৫৬ ভাগ বেশি। শেয়ারপ্রতি আয় বেড়ে হয়েছে এক টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৯৬ পয়সা। সামগ্রিক আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী রাজেশ সুরানা বলেন, ‘পুরো সিমেন্ট খাতের জন্যই ২০১৯ সাল অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। কাঁচা মালের মূল্য বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত কর আরোপ সিমেন্ট ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে। সব প্রতিবন্ধকতার পরও লাফার্জহোলসিমের সামগ্রিক পারফরম্যান্স অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ছিল। পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক উদ্ভাবন এবং কস্ট অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো এই অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রেখে আমাদের বিনিয়োগকারীদের ভালো ফলাফল উপহার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
এদিকে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিটির চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২০) আয় ও মুনাফা বেড়েছে।
প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৩১ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ১৪ পয়সা। ২০২০ সালের ৩১ মার্চে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ২৩ পয়সা, যা ২০১৯ সালের ৩১ মার্চে ছিল ১৩ টাকা ৯৫ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির মোট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬৯৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আর ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ তারিখে যা ছিল দুই হাজার ৬৯২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। হিসাবমতে, গত বছরের তুলনায় কোম্পানিটির সম্পদ বেড়েছে প্রায় ছয় কোটি টাকা।
আর ২০২০ সালের ৩১ মার্চে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে এক টাকা ১৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ৫৩ পয়সা ছিল। এদিকে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির মোট মুনাফা হয়েছে ৫২ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা, আগের বছর ছিল ৩৫ কোটি ৭৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। গত বছরের তুলনায় কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে প্রায় ১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ১৬১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৩৯৬ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ১১৬ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৬৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ১৯ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।