লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়িয়েছেন, এখন সেভাবেই কমাতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ভরা মৌসুমে আমন চালের দাম বাড়বে এটা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়িয়েছেন, এখন সেভাবেই কমাতে হবে।

গতকাল বুধবার বিকালে খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ধান-চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতি রোধকল্পে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মিলগেটে দুই টাকা দাম বাড়লে পাইকারি বাজারে ছয় টাকা কেন বাড়বে প্রশ্ন রেখে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘অবৈধ মজুতকারী কিংবা অহেতুক দাম বাড়িয়ে দেয়া ব্যবসায়ী কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। বিনা লাইসেন্সে যারা ধানের স্টক করছেন, তারা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না।’

সততা না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রেডি করা চাল বাজারে ছাড়তে হবে। সংকট তৈরি করা যাবে না। প্রচুর ধান আছে। সরবরাহের ঘাটতি নেই।’ এ সময় জেলা ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের (আরসি ফুড ও ডিসি ফুড) ফুড গ্রেইন লাইসেন্সবিহীন মজুতদারি বন্ধ এবং লাইসেন্স নবায়নের নির্দেশনা দেন খাদ্যমন্ত্রী।

সভায় নওগাঁ ধান-চাল মালিক সমিতির নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ‘মোটা চালের দাম বাড়েনি। সরু ও মোটা চালের দাম এক নয়। মোটা চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। গত ইরি মৌসুমের জিরাশাইল চালের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা। ঢালাওভাবে মিলারদের দায়ী করা হচ্ছে, এটা ঠিক নয়।’ করপোরেট কোম্পানিগুলো ধান-চালের বাজারকে অস্বাভাবিক বাড়াচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দিনাজপুর চাল মালিক সমিতির মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘সব ব্যবসায়ী বাজারে প্রতিযোগিতা করে ধান কেনায় দাম বেড়েছিল। এখন কেনা বন্ধ আছে।’ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করলে বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেন তিনি।

চাল ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘কৃষি বিভাগের উৎপাদন তথ্য সঠিক কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য থাকে উৎপাদন উদ্বৃত্ত কিন্তু বাস্তবে তা হয় না।’

বাংলাদেশ অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সেক্রেটারি এইচ আর খান পাঠান সাকি বলেন, ‘আমরা সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক বাজার প্রত্যাশা করি। চালের বাজার বাড়লে ছোট মিল মালিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

প্রাণ গ্রুপের পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, বাজার বাড়তি থাকায় তারা ধান কিনছেন না। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় বাজারের সঠিক চরিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না, সরকারের প্লানিংও সঠিকভাবে কাজ করছে না।

বাংলাদেশ অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘মিলারদের প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করতে হয়। সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নেই। দাম বেড়েছিল এটা সত্য, এখন বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে।

খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। এছাড়া এফপিএমইউ’র মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলম, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ অটো মেজর রাইস মিল মালিক সমিতি, বাবু বাজার বাদামতলী বনিক সমিতি, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি, চাল আমদানিকারকদের প্রতিনিধি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০