লালফিতার দৌরাত্ম্যে আমি নিজেও কাবু: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: লালফিতার দৌরাত্ম্য বড় বেশি হওয়ায় আমি নিজেও কিছুটা কাবু হয়ে গেছি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি। গতকাল রংপুর আরডিআরএস’এ জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার শিক্ষা, শোভন কর্মসংস্থান ও জেন্ডার সমতাবিষয়ক সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় রংপুর পিছিয়ে রয়েছে। বড় ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে চান না। তারা তাদের পরিবহন খরচসহ অনেক বিষয়ে হিসাব করেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পণ্য পরিবহনে যতটা ব্যয় হয় তার চেয়ে বেশি ব্যয় হবে চট্টগ্রাম থেকে রংপুরে আনতে। এ অঞ্চলে শ্রমিকের সহজলভ্যতা থাকলেও নানা কারণে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবু প্রধানমন্ত্রী কৃষিনির্ভর এ অঞ্চলের উন্নয়নে চেষ্টা করে চলেছেন।

দেশে উৎপাদিত আখ দিয়ে চিনিকল চালানো সম্ভব নয়Ñউল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এতে লোকসান হবে। শ্রমিকরা বেকার হয়ে আছেন। এই শ্রমিকদের প্রাধান্য দিয়ে বড় ব্যবসায়ীদের দিয়ে লাভজনক কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরির পরিকল্পনা নিতে হবে। আমার কাছে জার্মানির এক ব্যবসায়ী প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু লালফিতার দৌরাত্ম্য বড় বেশি। আমি নিজেও কিছুটা কাবু হয়ে গেছি। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী, বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ইশতেহার থাকে। আওয়ামী লীগেরও তেমন ইশতেহার ছিল। প্রধানমন্ত্রী সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সেই লক্ষ্য কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে সারাবিশ্বের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় খুব একটা খারাপ হয়নি।

মন্ত্রী বলেন, একটা সময় যাত্রী সংকটে ভুগছিল সৈয়দপুর বিমানবন্দর। অথচ এখন প্রতিনিয়ত ১৫ থেকে ১৬টি ফ্লাইট ওঠানামা করছে। আগামী এক বছরের মধ্যে এটা ডাবল হবে বলে আশা করি। কারণ মানুষ এখন আসতে শুরু করেছেন। সৈয়দপুর থেকে নেপাল, ভুটান ও ভারতে যোগাযোগ স্থাপনে কাজ করা হচ্ছে। পঞ্চগড়ের চা বাগান ঘিরে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছেÑজানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ঠাকুরগাঁওয়ে বিমানবন্দর চালু ও পঞ্চগড়ে উন্নতমানের আবাসন ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও চিলমারী বন্দর চালুর কথা জানিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে রংপুর সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ, বন্ধ চিনিকলগুলোয় বিকল্প উৎপাদনের ব্যবস্থা নেয়া, ইপিজেড স্থাপন, অর্থনৈতিক জোন তৈরি ও তিস্তা নদী ঘিরে মহাপরিকল্পনা গ্রহণসহ এ অঞ্চলের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন মন্ত্রী।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি করপোরেশেন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও সিপিডির আয়োজনে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য দেন রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সনাক, রংপুরের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু, সুজন রংপুর জেলার সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর আলি, নারীনেত্রী মোশফেকা রাজ্জাক, আরডিআরএসএ’র হেড অব ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম আব্দুস সামাদ। সংলাপে মুক্ত আলোচনায় রংপুর অঞ্চলের উন্নয়নে কৃষিভিত্তিক আলাদা বাজেট বরাদ্দ, সরকারি স্কুল নির্মাণ, শিক্ষিত বেকারদের ভাতা বিতরণ, আইটি পার্ক নির্মাণ, রেলপথ ও আকাশপথ সম্প্রসারণসহ নানা সুপারিশ তুলে ধরেন অংশগ্রহণকারীরা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০