লালমনিরহাটে তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে অবগত নয় মানুষ

 

জে আই সমাপ্ত, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে সরকারি দফতরের সেবা খাতের তথ্য জানতে তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহার নেই বললেই চলে। সাধারণ মানুষ এ আইন সম্পর্কে না জানায় কোনো সুফল পাচ্ছে না। এ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রচার-প্রচারণা না থাকায় সেবাগ্রহীতারা এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
লালমনিরহাটে রয়েছে সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ দফতর-অধিদফতরে কেউ তথ্য নিতে যান না। আবার হাতেগোনা দু-একজন তথ্য চেয়ে আবেদন করলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অসহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই। কোনো সময় তথ্য মিললেও তাতে পরিপূর্ণ তথ্য থাকছে না। লালমনিরহাটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তথ্য অধিকার আইনের এমন হতাশাজনক চিত্র মিলেছে।
এদিকে বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, তাদের তরফ থেকে কোনো অসহযোগিতা নেই। বরং তথ্যগ্রহীতারাই আসেন না দফতরে। তথ্য জানার নিয়ম সম্পর্কে মানুষের ধারণা না থাকায় আইনের সুফল গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছে তৃণমূলের মানুষ। একই সঙ্গে সরকারের জনবান্ধব উদ্যোগও কার্যকারিতা হারাচ্ছে। আইনটি ব্যবহারে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আইনটি সম্পর্কে জানানোর তাগিদ দেওয়া প্রয়োজন। সাধারণের মাঝে উদ্বুদ্ধকরণ প্রচার চালালে জনসাধারণের মধ্যে তথ্য জানার আগ্রহ তৈরি হতো। মানুষ আর অজ্ঞাত থাকত না।
তথ্য অধিকার আইনের নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করে তথ্য না পাওয়া সাংবাদিক মাহফুজ সাজু ও ব্যবসায়ী রোকুনুজ্জামান রোমান জানান, লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ, এলজিইডি, সড়ক ভবন ও লালমনিরহাট সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তথ্য ফরমে তারা আবেদন করলেও কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি তাদের। কী কারণে তথ্য দেওয়া যাবে না, তাও জানানো হয়নি। এ রকম হয়রানির কারণে তারা এখন আর তথ্য ফরমে আবেদন করেন না।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নূর-ই-জান্নাত জানান, গত এক বছরে তাদের দফতরে শুধু একটি করে তথ্যের জন্য আবেদন পড়েছে এবং তারা নির্দিষ্ট সময়ে সে তথ্য দিয়েছেন। জেলা মার্কেটিং অফিসার আবদুর রহিম জানান, তার দফতরে আজ পর্যন্ত কেউ তথ্যের জন্য তথ্য ফরমে আবেদন করেননি। তবে যদি কেউ আবেদন করেন, অবশ্যই তারা নিয়ম অনুযায়ী তথ্য দিতে আগ্রহী।
জেলা তথ্য কর্মকর্তা আতিকুর রহমান শাহ্ জানান, সরকার তথ্যের অবাধ প্রবাহ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ পাস করেছে। কিন্তু লালমনিরহাটের জনগণ এ আইনটির বিষয়ে কিছু জানে না। কীভাবে বিভিন্ন দফতরে আবেদন করবেন, তা তাদের জানা নেই। আবার যারা জানেন, তারা অনেকেই নানা হয়রানির কারণে তথ্য চাইতে যান না। এজন্য তথ্য আইন সম্পর্কে আরও বেশি প্রচার চালিয়ে সবাইকে সচেতন করতে হবে।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, তথ্য আইনের ব্যবহার বাড়াতে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচারের পাশাপাশি সেমিনার করতে হবে। এছাড়া গণমাধ্যমকর্মীদের এ আইনের ব্যবহার সম্পর্কে প্রতিবেদন, ফিচার, নিবন্ধন প্রকাশের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০