শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, লালমনিরহাট: লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের দেওয়া ভিজিএফের (ভালনেরাবেল গ্রুপ ফিডিং) চাল বিতরণে উপকারভোগী নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বসুনীয়াকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছেন।
জানা যায়, মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন পরিষদ ভিজিএফের দুই হাজার ৩০৩টি কার্ড বরাদ্দ পায়। এর মধ্যে ৯ ইউপি সদস্য ও তিন সংরক্ষিত নারী সদস্যকে ৯০টি করে এক হাজার ৮০টি কার্ড বিতরণের জন্য দেওয়া হয়। আর চেয়ারম্যান এক হাজার ২২৩টি ভিজিএফ কার্ড হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে বিতরণ করেন। চূড়ান্ত উপকার ভোগীর তালিকা ধরে গত ১৫ জুন এক হাজার ৫৫৩ ভিজিএফ কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়।
কিন্তু ভিজিএফের উপকারভোগী নির্বাচনে ক্রমিক নং ১৪৭৭ এবং ১৫৫৫তে একই নাম দু’বার, লালমনিরহাট জেলা পরিষদের সদস্য, তিস্তা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী (ক্রমিক নং- ১৪৭৬) শিরিন সুলতানা, তার বোন (ক্রমিক নং- ১৫৫৬) তহমিনা আক্তারসহ বেশ কিছু সচ্ছল, ধনী পরিবারের নামের অভিযোগ আসায় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার রেজাউল করিম ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়ের পরামর্শে চাল বিতরণ বন্ধ রাখা হয়। পরে গত বুধবার হতদরিদ্র পরিবার সরাসরি উপস্থিত হয়ে চাল তুলেও ভিজিএফ কার্ডধারী ধনাঢ্য পরিবারগুলোর সদস্যরা কেউ চাল তুলতে আসেননি। পরে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়শ্রী রানী রায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবশিষ্ট চাল ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে রেখে সিলগালা করে দেন।
লালমনিরহাট জেলা পরিষদের সদস্য তাহমিদুল ইসলাম জানান, আমাকে নিয়ে একটি ষড়যন্ত করা হয়েছে।
মহেন্দ্রনগর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বসুনিয়া জানান, আওয়ামী লীগ থেকে যে ৬৫০ জনের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে সেখানে জেলা পরিষদ সদস্য, প্রভাষক, বিভিন্ন নেতাসহ সচ্ছল পরিবারের ব্যক্তিদের নাম ছিল। আমি তালিকাটি ভালোভাবে দেখার সময় পাইনি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় জানান, জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলামসহ যেসব উপকার ভোগীর নামের তালিকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মহেন্দ্রনগর ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বসুনীয়ার কাছে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের খবর পাওয়ায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাটে ভিজিএফ তালিকায় প্রভাষকের নাম
