তাহসিন আহমেদ: রসাল ফলের মধ্যে লিচু জনপ্রিয় একটি ফল। সব বয়সের মানুষের কাছে প্রিয় ফলটি মজাদার ও সুস্বাদু। বাংলাদেশের চারটি জেলায় লিচুর ফলন বেশি হয়। এ চারটি জেলা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ, দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জ ও রাজশাহী।
সবার আগে বাজারে আসে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার লিচু। এরপর দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জ ও সব শেষে রাজশাহীর লিচু। অর্থাৎ রসাল এ ফলটি মৌসুমের শুরুতেই সোনারগাঁ থেকে বাজারে আসে। আগেভাগে বাজারে ওঠে। সুস্বাদু ও সুমিষ্ট লিচু বলে চাহিদা বেশি, দামও বেশি। দাম বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ হলো, এ লিচুর মৌসুম স্থায়ী হয় মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিন।
সোনারগাঁয়ের লিচু বাগানগুলোয় সাধারণত তিন জাতের লিচু হয়ে থাকে। এগুলো হলো পাতি লিচু, কদমি লিচু ও বোম্বাই লিচু। সবার আগে পাকে পাতি লিচু। বাজারে বিক্রি হওয়া সোনারগাঁওয়ের লিচুর বেশিরভাগ পাতি লিচু। তবে দাম বেশি হয় কদমি লিচুর। কারণ এ প্রজাতির লিচু আকারে বড়, স্বাদও তুলনামূলক বেশি। সব শেষে বোম্বাই জাতের লিচু পেকে থাকে। অনেকে আকারে বড় হওয়ার কারণে কদমি লিচুকে ‘দিল্লিকা লাড্ডু’ বলে ডাকে।
সোনারগাঁওয়ের লিচুর ঐতিহ্য ৪১৭ বছরের পুরোনো। পর্তুগিজ আমলে ১৭০০ সালে প্রথম লিচু চাষ শুরু হয়। পর্তুগিজরাই সোনারগাঁওয়ে প্রথম লিচু চাষ শুরু করেন।
লিচু চাষে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও বাম্পার ফলন হওয়ায় ফলটি চাষে আগ্রহী স্থানীয়রা। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৬০টি গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তিন শতাধিক লিচু বাগান। এর পাশাপাশি বাড়ির আঙিনায় ও কৃষি জমির পাশেও লিচু চাষ শুরু করেন চাষিরা।
সোনারগাঁ পৌরসভার আমিনপুর, পানাম, বৈদ্যেরবাজার, মোগড়াপাড়া, সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছে পাকা লিচু শোভা পাচ্ছে। সোনারগাঁওয়ে বিভিন্ন লিচু বাগানে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। লিচুর আকারও এবার বেশ বড়। তাই বিক্রেতারা ভালো দাম পাচ্ছেন।