লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় সূচকের উত্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল লেনদেনের শুরুতে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ক্রেতা সংকট দেখা দিলেও শেষ আধা ঘণ্টার চমকে সূচক ও লেনদেন উভয় বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে অধিকাংশ কোম্পানি। অবশ্য এরপরও প্রায় দুই ডজন কোম্পানির ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে লেনদেনের প্রায় পুরো সময়। বেলা ২টা পর্যন্ত কোনো রকমে টেনেটুনে পাঁচশ কোটি টাকা ছাড়ায় ডিএসইর লেনদেন। কিন্তু পরের আধা ঘণ্টায় পাল্টে যায় লেনদেন চিত্রও। শেষ আধা ঘণ্টায় দুইশ কোটি টাকার লেনদেন যোগ হয়। অর্থাৎ সূচক বদলে যায় শেষ এক ঘণ্টায়। আর লেনদেন বদলে যায় শেষ আধা ঘণ্টায়।

ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩ পয়েন্ট কমে যায়। অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যেই সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। লেনদেনের ২০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ১০ পয়েন্ট। তবে লেনদেনের সময় আধা ঘণ্টা না গড়াতেই আবার সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। এভাবে চলতে থাকা লেনদেনের মধ্যে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৪ পয়েন্ট। তবে কমে অপর দুই সূচক। সেই সঙ্গে ২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।

লেনদেনের প্রায় সম্পূর্ণ সময়জুড়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে। ক্রেতা সংকট দেখা দেয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয় দিনের সর্বনি¤œ দামে। লেনদেনের একপর্যায়ে এ সংখ্যা বেড়ে প্রায় অর্ধশত হয়ে যায়। তবে শেষ ঘণ্টায় এসে ক্রেতা ফেরে অনেক প্রতিষ্ঠানের। ফলে ২৩ প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য থেকে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

এদিকে প্রথম আড়াই ঘণ্টার লেনদেনে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় নাম লেখালেও লেনদেন শেষে দাম বাড়ার তালিকায় ভারী হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ২৩৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯১টির। আর ৫৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩২০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

গতকাল মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বাজারটিতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭০০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৯৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১০৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৬ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকের ২৮ কোটি ৪১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑজেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, ফু-ওয়াং সিরামিক, স্যালভো কেমিক্যাল, লুব রেফ বাংলাদেশ, মালেক স্পিনিং, সোনারগাঁও টেক্সটাইল এবং মুন্নু ফেব্রিক্স।

প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯১টির বা ২৩ দশমিক ৮২ শতাংশ শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এদিন শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি কমেছে ফরচুন সুজের। আগের কার্যদিবস রোববার ফরচুন সুজের দর ছিল ৯৫ টাকা ২০ পয়সা।  লেনদেন শেষে গতকাল দর দাঁড়ায় ৯৩ টাকা ৩০ পয়সা। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১ টাকা ৯০ পয়সা বা ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ দর কমেছে। এর মাধ্যমে ফরচুন সুজের ডিএসইর দর পতনের তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে এমারল্ড অয়েলের ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, পেপার প্রসেসিংয়ের ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, মনোস্পুল পেপারের ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, হাইডেলবার্গ সিমেন্টর ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ফাইন ফুডসের ১ দশমিক ৯২ শতাংশ, ইনফরমেশন সার্ভিসেস লিমিটেডের ১ দশমিক ৯১ শতাংশ, সিনোবাংলার ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ দর কমেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ২০ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৯০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৪টির এবং ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০