নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে গতকাল সোমবারে প্রধান সূচক পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে এদিন লেনদেন আগের দিনের তুলনায় আরও বেড়েছে। এতে লেনদেন বেড়ে এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে পতনেও চার খাতে কেনার চাপে শেয়ারদর কিছুটা বেড়েছে। এদিন বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ার। ফলে আলোচিত খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এদিকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপ থাকায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনে শীর্ষে থাকলেও খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের শেয়ারদর কমেছে। সেই সঙ্গে এদিন শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে জীবন বিমা খাতের।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল আগ্রহ বেশি থাকা ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৩টির দর বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিমেন্ট খাতে শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের ২টির দাম বেড়েছে এবং ৩টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল সিরামিক এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ার। এদিকে গতকাল টেলিকমিউনিকেশন এবং আর্থিক খাতের শেয়ারদর কমা বা বৃদ্ধির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
গতকাল শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে জীবন বিমা খাতে। এ খাতে ২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। ২ শতাংশ শেয়ারদর কমে আইটি খাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল। শেয়ারদর কমার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত। খাতটিতে ১ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হওয়া বস্ত্র খাত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। চতুর্থ স্থানে থাকা জীবন বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজারটিতে ৩৭৬টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৩৪ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ৩৭৪টি শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৪ কোটি ৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯২১ কোটি ৪৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে।
এর আগে গত ৬ জুন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৬ কোটি ৮৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। তারপর গতকাল সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে। এদিন লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৭টির। বিপরীতে কমেছে ১৬০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দাম।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩২৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএস-৩০ সূচক দুই দশমিক ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ২৮ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে ২১৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ৯৯টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৮টির দাম।
দিনশেষে সিএসইতে ২৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩০২ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯২১ টাকার।