নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবারের লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে এদিন লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে পতনেও তিন খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও কেনার চাপ বেশি থাকায় দর বেড়েছে। এদিন চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ার। ফলে আলোচিত খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ও শেয়ার বিক্রির চাপে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল আগ্রহ বেশি থাকা ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এখাতে লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টির দর বেড়েছে এবং ২টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে। দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে ছিল সাধারণ বিমা খাত। খাতটিতে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে গতকাল তৃতীয় স্থানে ছিল ট্যানারি খাত।
এদিকে গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, সিরামিক, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাংক, প্রকৌশলী, ওষুধ ও রসায়ন এবং আর্থিক খাতের শেয়ারদর কমা বা বৃদ্ধির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সবচেয়ে বেশি দর কমেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের। খাতটিতে ১ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। এদিন দ্বিতীয় স্থানে ছিল জীবন বিমা খাত। এ খাতে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। শেয়ারদর কমার তৃতীয় স্থানে থাকা পাট খাতে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ দর কমেছে।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোট লেনদেনের ৩৭ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৭ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। চতুর্থ স্থানে থাকা বস্ত্র খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৬৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সোমবার বাজারে লেনদেন হওয়া ৩০০টি কোম্পানির মধ্যে ৬৭টির শেয়ারের দাম কমেছে। বিপরীতে বেড়েছে ৮১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৩ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক দশমিক ৫৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১২৮ পয়েন্টে।
এদিন ৩০০টি কোম্পানির ৯ কোটি ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৮৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে ৪৪৬ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৩৫ কোটি ৯৮ লাখ ১০ হাজার টাকার। তার আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭০০ কোটি ৭৮ লাখ ৫১ হাজার টাকার। অর্থাৎ ক্রমশ লেনদেন কমছে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। এরপরের তালিকায় ছিল যথাক্রমে রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল এবং এমারেল্ড অয়েল লিমিটেডের শেয়ার।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৯০ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৫৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৩টির, কমেছে ৫৪টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৭টির দাম।
দিন শেষে সিএসইতে ৭ কোটি ৮৮ লাখ ৯৬ হাজার ৬২১ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের লেনদেন হয়েছিল ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৯ হাজার ৪৪৪ টাকার শেয়ার।