নিজস্ব প্রতিবেদক: বস্ত্র খাতের লেনদেন এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সাত শতাংশ বেড়েছে। আলোচিত সময়ে ব্যাংক খাতের লেনদেন কমেছে ছয় শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন পর্যালোচনায় এমনটিই জানা গেছে।
তথ্যমতে, মোট লেনদেনে গেল সপ্তাহে বস্ত্র খাতের অংশগ্রহণ ছিল ১৬ শতাংশ। আলোচিত সময়ে খাতটির দৈনিক গড় লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৮০ কোটি টাকা। মোট লেনদেনে ব্যাংক খাতের দখলে ছিল ২০ শতাংশ। এছাড়া ব্যাংক খাতের দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৯৮ কোটি টাকা।
এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেনে বস্ত্র খাতের অংশগ্রহণ ছিল ৯ শতাংশ। এ সময়ে খাতটির দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি টাকা। মোট লেনদেনে ব্যাংক খাতের অংশগ্রহণ ছিল ২৬ শতাংশ। ওই সময় খাতটির দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ১১৪ কোটি টাকা।
অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের লেনদেনের হার কমেছে ছয় শতাংশ। খাতটির দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৬ কোটি টাকা। এছাড়া বস্ত্র খাতের লেনদেন হার বেড়েছে সাত শতাংশ। আলোচিত সময়ে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে ৪২ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের জানুয়ারিতে বাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল। লেনদেনের পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বরে এসে লেনদেন অনেকটা কমে যায়। ঠিক তেমনি চলতি বছরের শুরুতে বাজারের লেনদেনের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে লেনদেনে নতুন রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তারা আরও বলছেন, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা খাতের ডিক্লারেশন ঘোষণার সময় ঘনিয়ে আসছে। এসব খাতের কোম্পানিগুলোর ডিক্লারেশন শুরু হলে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে। এতে লেনদেনেও প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সম্পর্কে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, ব্যাংকের শেয়ারের দর এখনও স্বাভাবিক অবস্থানে রয়েছে। তবে ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর ডিক্লারেশন শুরু হলে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়বে বিনিয়োগকারীদের। এতে বাজারের লেনদেনে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।
এদিকে পিই রেশিও অনুযায়ী, গেল সপ্তাহের ব্যাংকিং খাতের পিই রেশিও ছিল ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। এরপরের অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি খাতের। খাতটির পিই রেশিও ১৩ দশমিক দুই শতাংশ এবং বিমা কোম্পানির পিই রেশিও ১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে বস্ত্র খাতের পিই রেশিও ২২ দশমিক আট পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও ছিল ১০ দশমিক চার শতাংশ।
পরের অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি, বিমা খাতের। খাত দুটির পিই রেশিও ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৭ পয়েন্ট এবং ১২ দশমিক ৯ পয়েন্টে। এ ছাড়া বস্ত্র খাতের পিই রেশিও ছিল ২১ দশমিক চার শতাংশ। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও সামান্য কমেছে। এছাড়া অন্যান্য খাতের পিই রেশিও সামান্য বেড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো কোম্পানির শেয়ারদর বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে পিই রেশিও ওঠানামা করে। দর কমলে পিই রেশিও কমে, দর বাড়লে পিই রেশিও বাড়ে। তবে পিই রেশিও যতক্ষণ পর্যন্ত ১৫-এর ঘরে থাকে ততক্ষণ বিনিয়োগ নিরাপদ।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের খাতভিত্তিক লেনদেন শীর্ষে ছিল ব্যাংকিং খাত। মোট লেনদেনে ২৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ ছিল ব্যাংকিং খাতের দখলে। তাছাড়া শীর্ষ দশের মধ্যে ছিল বস্ত্র খাত। মোট লেনদেনে খাতটির অংশগ্রহণ ছিল ছয় দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।
উল্লেখ্য, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর হিসাববছর গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য কোম্পানির হিসাববছর জুনে শেষ হবে।