লেনদেন কমলেও ‘ক্রয় চাপে’ ইতিবাচক সূচক

মো. আসাদুজ্জামান নূর: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল পুঁজিবাজারে ‘ক্রয় চাপ’ বেড়েছে। এতে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব সূচক। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ৮ দশমিক ৪ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। সূচকের উত্থান হলেও টাকার অঙ্কে লেনদেন আরও কমেছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগের কার্যদিবসগুলোয় ধারাবাহিকভাবে ‘বিক্রয় চাপের’ প্রভাবে বাজারে পতন ঘটে। গতকাল এ চিত্র পাল্টে বিক্রেতাদের চেয়ে ক্রেতারা বেশি সক্রিয় ছিলেন। এদিন বাজারে ৬৪ শতাংশ ‘ক্রয় চাপের’ বিপরীতে ‘বিক্রয় চাপ’ ছিল ৩৬ শতাংশ। এর প্রভাবে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে পুঁজিবাজার।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ‘বি’ ক্যাটেগরির শেয়ার কেনায় আগ্রহী ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। এর বিপরীতে ‘এ’ ক্যাটেগরির শেয়ার ছাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে। ফলে তুলনামূলক ‘বিক্রয় চাপ’ ছিল ‘এ’ ক্যাটেগরির শেয়ারে।

গতকাল বাজারে সিরামিকস ও আইটি খাতে সর্বোচ্চ ‘ক্রয় চাপ’ ছিল। অন্যদিকে পাট এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ‘বিক্রয় চাপ’ বেশি ছিল। এছাড়া বিবিধ খাতে শূন্য দশমিক ১০৮ শতাংশ বাজার মূলধন বেড়েছে।

আগের কার্যদিবস বুধবারে ডিএসইতে এক হাজার ১৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত ৪ মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ ছিল। এর আগে গত ২৯ জুন ডিএসইতে এক হাজার ১৪৮ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। কিন্তু গতকাল সেই রেকর্ড ভেঙে ডিএসইতে লেনদেন দাঁড়ায় এক হাজার ৬৮ কোটি ৪২ লাখ টাকায়।

আগের কার্যদিবসের মতো লেনদেনের শীর্ষে ছিল বস্ত্র খাত। ১৫৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হওয়া এ খাতের অবদান ছিল ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের কার্যদিবসে ১৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতে লেনদেন হয়েছিল ১৯৬ কোটি ৪০ লাখ। গতকাল লেনদেন হওয়া ২৩টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, কমে ২৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৮টির।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবস থেকে বেশি হয়েছে। গতকাল লেনদেন হয় ১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ১৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের সমান ১২টি করে কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি ও হ্রাস পায়। আর অপরিবর্তিত ছিল ৮টির।

ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৩৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের লেনদেন আগের দিনের চেয়ে ৭০ লাখ টাকা বেশি হয়। এ খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পেতে দেখা যায়। ১৭টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার বিপরীতে দর বাড়ে ১২টির ও অপরিবর্তিত ছিল একটির।

লেনদেনের চতুর্থ অবস্থানে ছিল বিবিধ খাত। ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ অবদান রেখে এ খাতের লেনদেন দাঁড়ায় ১১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে এ খাতের অবদান ছিল ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গতকাল এ খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পেতে দেখা গেছে। ১০টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার বিপরীতে দর বাড়ে দুটির ও অপরিবর্তিত ছিল মাত্র একটির।

পরের অবস্থানে থাকা খাদ্য খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে প্রায় ১০০ কোটি কম হয়। গতকাল লেনদেন হয় ৬৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে এটি ছিল ১৬৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। গতকাল এ খাতের ১০টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়। এর বিপরীতে দর বাড়ে ৯টির ও অপরিবর্তিত ছিল একটির।

এছাড়া গতকাল লেনদেনে প্রকৌশল ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ, জ্বালানি ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ, সিমেন্ট ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও বিমা ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ অবদান রাখে।

গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএস ৮ শতাংশ বেড়ে ছয় হাজার ৯০৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস এক পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৬২ ও ডিএস৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬০১ পয়েন্টে স্থির হতে দেখা যায়।

গতকাল লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৭৫টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৩১টির, কমেছে ১৯৫টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৪৯টির।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০