নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন কমলেও সব সূচক ইতিবাচক হওয়ার পাশাপাশি বেশিরভাগ শেয়ারদর বেড়েছে। ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসে গতকাল লেনদেনের শুরুতে বিক্রির চাপ বেড়ে গেলে সূচক নেমে যায়। মাঝে মাঝে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। তবে নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন চলতে থাকে। বেলা ১টার পর হঠাৎ শেয়ার কেনার চাপ বাড়লে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। শেষ পর্যন্ত প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট ইতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। ডিএসইতে ৬৫ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে; কমেছে ১৮ শতাংশের। অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক, শেয়ারদর ও লেনদেনে একই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ২০১ দশমিক ৪২ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১৯২ দশমিক ২১ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস৩০ সূচক দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য চার শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৮৩৭ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন তিন লাখ ৮৬ হাজার ৬২৬ কোটি ৩১ লাখ ৩৮ হাজার ৬০ টাকা হয়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪১০ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৯ কোটি চার লাখ ৫১ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এদিন ৯ কোটি ৭৯ লাখ ১৫ হাজার ৭০৮টি শেয়ার এক লাখ ৮৭৯ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫২ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২৮টির, কমেছে ৬৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬১টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ইউনাইটেড পাওয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ছয় টাকা ৬০ পয়সা। খুলনা পাওয়ারের ১৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা লেনদেনের পাশাপাশি দর বেড়েছে আড়াই টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা জেএমআই সিরিঞ্জের ১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে পাঁচ টাকা ৩০ পয়সা। গ্রামীণফোনের ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে ৯০ পয়সা। এছাড়া ফরচুন শুজের ৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৯ কোটি টাকা, মুন্নু সিরামিকের আট কোটি ৮৮ লাখ টাকা, বঙ্গজের আট কোটি ৬৮ লাখ টাকা, বিএসসিসিএলের আট কোটি ২১ লাখ টাকা ও স্কয়ার ফার্মার ছয় কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
১০ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড। ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ডের দর ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ, এসইএমএলআইবিবিএল শরিয়াহ্ ফান্ডের আট দশমিক ৮৬ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ডের সাত দশমিক ৫৭ শতাংশ, আইসিবি থার্ড এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের সাত দশমিক ৪০ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সাত দশমিক ৩৫ শতাংশ, সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের সাত দশমিক ৩১ শতাংশ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের দর সাত দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে ইউনাইটেড এয়ার। এমারাল্ড অয়েলের দর পাঁচ দশমিক ১২ শতাংশ, নর্দান জুটের চার দশমিক ৪৩ শতাংশ, সাভার রিফ্র্যাক্টরিজের তিন দশমিক ৬৬ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের তিন দশমিক ৬১ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দুই দশমিক ৩৯ শতাংশ, সাইফ পাওয়ারের দুই দশমিক ১৭ শতাংশ, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের এক দশমিক ৯১ শতাংশ, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের এক দশমিক ৭৫ শতাংশ ও কনফিডেন্স সিমেন্টের দর এক দশমিক ৭১ শতাংশ কমেছে।
সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ২৭ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার ৬৬০ দশমিক ৯০ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৪ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে ১৫ হাজার ৮৯৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৫৭ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৪টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৬ কোটি ৮১ লাখ তিন হাজার ৮৫৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২২ কোটি ৮৮ লাখ ৯২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ছয় কোটি সাত লাখ টাকা। সিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটির দুই কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর ডরিন পাওয়ারের দুই কোটি ১০ লাখ টাকার, খুলনা পাওয়ারের ৭৫ লাখ টাকার, কপারটেকের ৭৩ লাখ টাকার, লাফার্জহোলসিমের ৩৮ লাখ টাকার, মুন্নু সিরামিকের ৩৩ লাখ টাকার, বিএসসিসিএলের ৩০ লাখ টাকার, এসকে ট্রিমসের ৩০ লাখ টাকার, বেক্সিমকো ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের সাড়ে ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
লেনদেন কমলেও সূচক ও বেশিরভাগ শেয়ারদর ইতিবাচক
