নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবারের লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচক বৃদ্ধিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও কেনার চাপ বেশি ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ারে। ফলে আলোচ্য খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে এদিন উত্থানেও বিনিয়োগকারীদের বিমুখ ও শেয়ার বিক্রির চাপ বেশি ছিল বিমা খাতে। ফলে আলোচ্য খাতের দর সবচেয়ে বেশি কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল কাগজ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৪টির দর বেড়েছে এবং ১টির দর কমেছে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ার। খাতটিতে শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল পাট খাত। গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, সিরামিক, ওষুধ ও রসায়ন, ট্যানারি, মিউচুয়াল ফান্ড, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় শুধু বিমা খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ব্যাংক খাতের শেয়ার। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল বিবিধ খাত।
লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিমা খাতে মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা বস্ত্র খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৮ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৮টি কোম্পানির মধ্যে ৮৯টির শেয়ারের দাম কমেছে। তার বিপরীতে বেড়েছে ৬৭টি কোম্পানির শেয়ার। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮২ কোম্পানির শেয়ার।
তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ২ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে। আর ডিএস-৩০ সূচক ৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪৩ পয়েন্টে।
এদিন ৩৩৮ প্রতিষ্ঠানের ১১ কোটি ৪২ লাখ ৫১ হাজার ২৬৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ৫৩৮ কোটি ৬৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪২৭ কোটি ৪৯ লাখ ২২ হাজার টাকা।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রূপালী লাইফের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল সোনালী পেপারের শেয়ার। এরপর তালিকায় ছিল যথাক্রমে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন, ইস্টার্ন হাউজিং, জেমিনি সি ফুড, রয়েল টিউলিপ সি পার্ল, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের শেয়ার।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬২৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৮৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৩টির, কমেছে ৫৪টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৮টির দাম।
দিন শেষে সিএসইতে ১০ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪৪৩ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮১ হাজার ৫৯১ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।