নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটেগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন নিষ্পত্তির সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে। পূর্বে এ ধরনের কোম্পানির শেয়ার লেনদেন নিষ্পত্তি ১০ দিন সময় লেগে যেত। অথাৎ কেউ ‘জেড’ ক্যাটেগরির শেয়ার কিনলে তা বিক্রি করতে টি+৯ বা ১০ দিন অপেক্ষা করতে হতো। এখন তা টি+৩ বা চার দিন করা হয়েছে। গতকাল থেকে পুঁজিবাজারে এ নিয়ম চালু হয়েছে।
নতুন নিয়ম চালুর প্রথম কার্যদিবসেই চাঙা দেখা গেছে এ খাতের শেয়ার। বর্তমানে এ খাতে তালিকাভুক্ত রয়েছে ৪২টি কোম্পানি। এর মধ্যে গতকাল মাত্র পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমতে দেখা গেছে।
এদিকে লেনদেন নিষ্পত্তির সময়সীমা কমিয়ে আনা নিয়ে বাজারসংশ্লিষ্টদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা যায়। কেউ কেউ এটাকে ইতিবাচক বললেও অনেকেই এর সমালোচনা করছেন।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে জয়তুন সিকিউরিটিজ ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান শেয়ার বিজকে বলেন, লেনদেন নিষ্পত্তির সময়সীমা কমিয়ে আনা বিএসইসির ভালো উদ্যোগ। এতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। কারণ কোনো শেয়ারে কারসাজির আশঙ্কা থাকলে তারা দ্রুত এ শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে যেতে পারবেন। আগে এ শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হতো। এখন আর সেই ভোগান্তি থাকবে না।
একই বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, এ ধরনের শেয়ার নিয়ে বেশি কারসাজির ঘটনা ঘটে। পূর্বে ১০ দিনে এ শেয়ার বিক্রয়যোগ্য হতো। তখন কারসাজিকারীদের কিছুটা হলেও ঝুঁকি ছিল। কারণ শেয়ার বিক্রয়যোগ্য হতে হতে বাজারচিত্র বদলে যেতে পারত। কিন্তু এখন সেই ঝুঁকি কমে গেছে। এখন তারা দ্রুত শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবেন।
এদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনায় ‘জেড’ ক্যাটেগরিভুক্ত ১২ কোম্পানি তাদের পূর্বের অবস্থানে অর্থাৎ ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটেগরিতে ফিরেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, লিবরা ইনফিউশন, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, এবি ব্যাংক, ফু-ওয়াং সিরামিক ও রেনউইক যজ্ঞেশ্বর ‘এ’ ক্যাটেগরিতে এবং বিডি থাই, সালভো কেমিক্যাল, সাফকো স্পিনিং, অ্যাপোলো ইস্পাত, জাহিনটেক্স ও খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ‘বি’ ক্যাটেগরিতে ফিরেছে। গতকাল থেকে এসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন তাদের পূর্বের অর্থাৎ ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটেগরিতে হবে।
জানা গেছে, ‘এ’ বা ‘বি’ ক্যাটেগরিভুক্ত কোনো কোম্পানি পূর্ববর্তী বছরে লভ্যাংশ দিলে পরের বছর তা দিতে না পারলেও সেটি জেড ক্যাটেগরিতে যাবে না। ওই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন আগের ক্যাটেগরি অনুযায়ী হবে। তবে পরপর দু’বছর লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হলে বা বোনাস লভ্যাংশ দিলে ওই কোম্পানি জেড ক্যাটেগরিভুক্ত হবে। নতুন এ নিয়মের ফলে এ ১২ কোম্পানি ‘জেড’ থেকে পূর্ববর্তী ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটেগরিতে ফিরেছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, এটা ভালো সিদ্ধান্ত। একটি কোম্পানিকে অন্তত দুই বছর সময় দেওয়া উচিত। কারণ যে কোনো কারণে এক বছর কোম্পানির আর্থিক অবস্থা খারাপ হতে পারে। দ্বিতীয় বছরে গেলে তাদের আসল চিত্র দেখা যায়।