শেখ আবু তালেব: ক্রমেই সক্রিয় হচ্ছেন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে ব্যক্তিপর্যায়ের বড় বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। এছাড়া নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজেট পাস হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা পরিকল্পনা নিতে শুরু করেছেন। ফলস্বরূপ শেয়ার লেনদেনে সাম্প্রতিক সময়ে আটকে থাকা নির্দিষ্ট কোম্পানির বাইরে গিয়ে লেনদেন শুরু করেছেন। এতে দ্বিতীয় দিনের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন।
ডিএসইর গতকালের লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া যায়। জানা গেছে, নিয়মিত লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে ব্লক মার্কেটের লেনদেন। শুধু আলোচিত কোম্পানিই নয়, ব্লক মার্কেটে এখন পরিমাণে কম হলেও আরও কিছু কোম্পনি লেনদেন শুরু করেছে। ফলে সামনের দিকে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে শেয়ার ধারণের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোয়।
ডিএসইর তথ্য বলছে, গতকাল ব্লক মার্কেটে মোট ৪৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এ সময় তারা মোট ৭১ লাখ ৮৩ হাজার ৮০২টি শেয়ার লেনদেন করে, যার বাজারমূল্য ২৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। লেনদেনের শীর্ষে ছিল এমআই সিমেন্ট লিমিটেড। কোম্পানিটির তিন কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়। এছাড়া গ্রামীণফোনের দুই কোটি ৫৯ লাখ টাকার ও স্কয়ার ফার্মার দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয় এ মার্কেটে।
জানা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ৩৪২টি কোম্পানির ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৯টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়, যার বাজারমূল্য ছিল ২৩১ কোটি পাঁচ লাখ টাকার কিছুটা বেশি।
লেনদেন বৃদ্ধিতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিবসের চেয়ে ৩২ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে ৪০৩৪ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট, ডিএস-৩০ ১১ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৫৭ দশমিক ৫১ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস চার দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে ৯২৮ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ সময় লেনদেনে অংশে নেওয়া কোম্পানির মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ১০১টির, কমেছে ২৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১৮টির।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাধারণ ছুটির পর থেকে বিনিয়োগকারীদের মৌল ভিত্তির মধ্যে ওষুধ, ব্যাংক, টেলিকম, বস্ত্র ও বিমা খাতেই আগ্রহ ছিল বেশি। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা এখন সাধারণ বিমা, প্রকৌশল, খাদ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতেও আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছেন। এছাড়া ওষুধ ও ব্যাংক খাতেও আগের চেয়ে লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সতর্ক থেকে নতুন বিনিয়োগ শুরু করেছেন অনেক বিনিয়োগকারী। এজন্য নিজেদের পোর্টফলিওতে থাকা ভালো মানের শেয়ারে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন।
খাতভিত্তিক লেনদেন তথ্যে দেখা যায়, গতকাল সর্বোচ্চ লেনদেন ছিল ওষুধ খাতে। মোট লেদেনের ৩৮ শতাংশই দখল করে এ খাতটি। বর্তমানে খাতটিতে ৩২টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। আগের দিনের চেয়ে গতকাল এ খাতের শেয়ার লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৩ শতাংশ বেশি। গতকাল এ খাতে মোট ৭৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়। গতকাল ডিএসইতে মোট লেনদেন ছিল ২৩১ কোটি টাকার বেশি।
এর পরই মোট লেনদেনে ব্যাংক খাত ১৬ শতাংশ অবদান রাখে। এছাড়া প্রকৌশল খাত দুই শতাংশ, জ্বালানি সাত শতাংশ, এনবিএফআই দুই শতাংশ, টেলিকম তিন শতাংশ, খাদ্য দুই শতাংশ, বস্ত্র তিন শতাংশ, জীবন বিমা চার শতাংশ ও মিউচুয়াল ফান্ড তিন শতাংশ অবদান রাখে বলে জানা গেছে লেনদেন তথ্য বিশ্লেষণ করে।