নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে প্রধান সূচক নামমাত্র বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবারের লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন কমে ৭০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল চতুর্থ কার্যদিবসে সূচক বৃদ্ধিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও শেয়ার কেনার চাপ বেশি ছিল পাট খাতের শেয়ারে। ফলে খাতটি দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল। অপরদিকে এদিন বিনিয়োগকারীরা বিমুখ ছিলেন সেবা ও আবাসন খাতে। তাই শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল এ খাতে। আলোচ্য খাতটিতে শেয়ারদরের পতন হয়েছে। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষে থাকলেও আইটি খাতে শেয়ারদরের পতন হয়েছে। খাতটি শেয়ারদর কমায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল। তাই বিক্রির চাপে খাতটিতে লেনদেন বেশি হয়েছে এবং শেয়ারদর কমেছে বলে জানা যায়।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টির দর বেড়েছে এবং ১টির দর কমেছে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ট্যানারি খাতের শেয়ার। এ খাতের দর বেড়েছে ১ শতাংশ। খাতটিতে মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৫টির দর বেড়েছে এবং ১টির দর অপরিবর্তিত ছিল। শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় ছিল বস্ত্র খাত। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, মিউচুয়াল ফান্ড এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় সেবা খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ২০ শতাংশ। এরপর রয়েছে আইটি খাতের শেয়ার। খাতটিতে ১ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আইটি খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেন হওয়া বস্ত্র খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে ৭২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৮৩১ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৭৯ দশমিক ১০ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক ৩ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৭৩ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ১ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৮ দশমিক ৪০ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৯৪টি এবং কমেছে ৫৬টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৯৬টির।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার। আগেরদিন ১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৬২টি, কমেছে ৪৪টি এবং পরিবর্তন হয়নি ১১৪টির।
এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫০৩ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ১ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ২৬ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট ও সিএসআই সূচক দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৪৬১ দশমিক ৭২ পয়েন্টে ও ১ হাজার ১৭১ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স দশমিক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮১ দশমিক ২৯ পয়েন্টে।