Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:23 am

লেনদেন সাড়ে ১০ মাসে সর্বনিন্মে

মো. আসাদুজ্জামান নূর: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বৃহস্পতিবার উত্থানে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারেনি দেশের প্রধান শেয়ারবাজার। তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের পতন হয়েছে সামান্যই। অন্যদিকে টাকার অঙ্কে লেনদেন সাড়ে ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিন্মে চলে গেছে।

এদিন ৩৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪০টির। এছাড়া ৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৬৯৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ১ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট এবং ডিএস৩০ সূচক ৭ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪৪১ পয়েন্ট ও দুই হাজার ৪৬২ পয়েন্টে।

তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমলেও বড় পতন থেকে রক্ষা হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, ওষুধ ও রসায়ন এবং বস্ত্র খাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। এগুলোর মধ্যে খাদ্য খাতের ৮০ শতাংশ, ওষুধ খাতে ৫৮ শতাংশ এবং বস্ত্র খাতের ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর বেড়েছে। এই খাতগুলোর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর কমলে বড় পতনই হতো শেয়ারবাজারে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সৃষ্ট গুজবে বাজার পতনের কারণে দ্বিধায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের আস্থা এখনো ফেরেনি। যার কারণে লেনদেনে কার্যক্রমে অংশগ্রহণ কমেছে। যা বাজারকে নেতিবাচক দিকে ধাবিত করেছে।

এদিকে একক কোম্পানি হিসেবে সূচক হ্রাসে বেশি ভূমিকা রেখেছে যথাক্রমে গ্রামীণফোন, ওয়ালটন হাই-টেক, স্কয়ার ফার্মা, বিকন ফার্মা, পাওয়ার গ্রিড, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, ট্রাস্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, বার্জার পেইন্টস ও বেক্সিমকো ফার্মা। এই দশ কোম্পানির দর পতনের কারণে সূচক পড়েছে ৬ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।

বিপরীতে সূচক বাড়ানোর চেষ্টায় ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার, লিনডে বাংলাদেশ, পূবালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, খুলনা পাওয়ার, রবি, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, র‌্যাক সিরামিক্স ও তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল। কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধিতে সূচকে যোগ হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৪০ পয়েন্ট।

এদিকে সূচক সামান্য কমলেও গতকাল লেনদেন তলানিতে নেমেছে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৬৪৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। যা গত সাড়ে দশ মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ। এর আগে গত বছরের ১৯ এপ্রিল লেনদেন হয়েছিল ৬৯৭ কোটি ২৯ লাখ টাকার। এছাড়া আগের কার্যদিবসের চেয়ে গতকাল ১১ কোটি ৫১ লাখ টাকা কম লেনদেন হয়েছে। বুধবার হাতবদল হয়েছিল ৬৫৬ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার। এ লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বিবিধ খাত। মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৮ শতাংশই ছিল খাতটির দখলে। এছাড়া বস্ত্র খাতে ১১ শতাংশ, কাগজ ও মুদ্রণ ১০ দশমিক ৯ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন ৯ দশমিক ৭ শতাংশ, প্রকৌশল ৮ দশমিক ৮ শতাংশ, জীবন বিমা ৮ দশমিক ৫ শতাংশ ও ব্যাংক খাতে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশের নিচে ছিল।