লোকসানি হাক্কানি পাল্পের দাপট কমছে

 নিজস্ব প্রতিবেদক : যেভাবে উত্থান হয়েছিল, ঠিক সেভাবে পড়তে শুরু করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপারের শেয়ারদর। তিন মাস আগে কোনো কারণ ছাড়াই লাগামহীনভাবে এর দর বাড়তে থাকে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে শেয়ারদর ৫২ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকার কাছাকাছি চলে যায়। সম্প্রতি এটা কমতে শুরু করেছে। মাত্র ১৭ কার্যদিবসের ব্যবধানে শেয়ারদর নেমে এসেছে ৮৬ টাকা থেকে ৭৩ টাকায়। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ১৩ টাকা বা ১৮ শতাংশ।

এদিকে আর্থিকভাবে দুর্বল ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বেড়ে আবার কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বাজারসংশ্লিষ্টরা। ফলে প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিয়ে কারসাজি হচ্ছে এমন আশঙ্কা করছেন তারা।

এদিকে হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপারের শেয়ারদর লাগামহীন বৃদ্ধির বিষয়টি নজর এড়ায়নি ডিএসই কর্তৃপক্ষেরও। ফলে দরবৃদ্ধির সময় প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল ডিএসই। এর জাবাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের কাছে শেয়ারের দর বাড়তে পারে এমন কোনো সংবেদনশীল তথ্য নেই। মূলত এ খবর বাজারে পাওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার কিছুটা কমতে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দর।

প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিদেনে দেখা যায়, ব্যবসা মন্দা থাকার কারণে লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ৮৫ লাখ টাকা। ২০১৬ সালে লাভের বদলে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা লোকসান করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

দীর্ঘদিন থেকে শেয়ারহোল্ডারদের পাঁচ শতাংশ শেয়ার প্রদান করে কোনো রকমে ‘বি’ ক্যাটাগরি টিকিয়ে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ারের মধ্যে পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৫৫ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া ৩৬ দশমিক ১৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বাকি আট দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। ২০১৬ সালের ৩০ জুন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের কাছে শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৫৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।  পরে তারা এক দশমিক ৭৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেন।

আরমান হোসেন নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘কাগজ ও প্রকাশনা খাতের এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিয়ে কারসাজি হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তারাই বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে শেয়ারের দর বাড়ান। এখন দর কমিয়ে তারাই আবার শেয়ার কিনে নিচ্ছেন।’

জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের সচিব মোহাম্মদ মুসা শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর কেন বাড়ছে আবার কেন-ই বা কমছে, সেটা বলতে পারছি না। তবে আমাদের কাছে দরবৃদ্ধি বা কমার কোনো সংবেদনশীল তথ্য নেই।’

একই প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ‘ভালো শেয়ারও অনেক সময় অতিমূল্যায়িত হয়ে যায়। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিত শেয়ারের দর বেশি কি না, তা দেখে বিনিয়োগ করা। কোনো শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে গেলে সে প্রতিষ্ঠান থেকে সরে আসা উচিত।’

এদিকে গত এক বছরের লেনদেন চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময়রে মধ্যে প্রতিষ্ঠাটির শেয়ার সর্বনিম্ন ৪১ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়। একই সময়ে প্রতিষ্ঠাটির শেয়ার সর্বোচ্চ ৯৭ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়। আর গত দুই বছরের মধ্যে এ শেয়ারর সর্বনিম্ন ৩৮ টাকায় লেনদেন হতে দেখা যায়।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০