লোকসানি হাক্কানী পাল্পে শ্রমিক অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে গতকাল সকালে পটিয়ায় বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলের শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে গতকাল সকালে পটিয়ার হালিম খাঁ চর এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন বাড়নো হয়নি। এছাড়া বেশিরভাগ শ্রমিকই অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত। এ কারণে তেমন সুযোগ-সুবিধা তারা পায় না- এমন অভিযোগ আন্দোলনরত শ্রমিকদের। অপরদিকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ আন্দোলনের ফলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য পটিয়া থানা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ মোতায়ন ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক শেয়ার বিজকে বলেন, দুই বছরের অধিক সময় এ পেপার মিলে চাকরি করছি। অথচ আমার বেতন একবারও বাড়েনি। এছাড়া চাকরি স্থায়ীও করা হয়নি। পাশাপাশি বিভিন্নভাবে শ্রমিক নির্যাতন তো আছে। এভাবে তো বাংলাদেশের কোনো মিল চলে তা আমরা মনে হয় না।
এ প্রসঙ্গে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বিপিএম শেয়ার বিজকে বলেন, সকাল হাক্কানী পেপার মিলের শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সড়ক ব্যারিকেট দেয় বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে। পরে এটি মালিকপক্ষসহ সবার উপস্থিতিতে সমাধান করা হয়। তবে কোনো অঘটন ঘটেনি।
বিষয়টি জানার জন্য কোম্পানির সচিব মোহাম্মদ মুসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের শ্রমিকদের সঙ্গে কিছু সমস্যা হয়েছিল। পরে আলোচনার মাধ্যমে তা ঠিক করা হয়েছে। বিষয়টি মিটামাট হয়ে গেছে।
এদিকে আবারও বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপারের শেয়ারের দর। মন্দাবাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। দর বৃদ্ধির কোনো কারণ বলতে পারছে না কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। ফলে জেড ক্যাটেগরির এ শেয়ার নিয়ে কারসাজি হচ্ছে এমন শঙ্কা রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
কোম্পানির লেনদেন চিত্রে দেখা যায় দুই সপ্তাহ আগে এ শেয়ারের দর ছিল ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা। গতকাল যে শেয়ার লেনদেন হয় ৬১ টাকা ৬০ পয়সা। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে প্রতিটি শেয়ারের দর বেড়েছে সাত টাকা ১০ পয়সা বা প্রায় ১৩ শতাংশ।
এদিকে আর্থিকভাবে দুর্বল এ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বাজারসংশ্লিষ্ট কেউই না।
প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিদেনে দেখা যায় ব্যবসা মন্দা থাকার কারণে লোসানের পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৫ সালে এ প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ৮৫ লাখ টাকা। ২০১৬ সালে লাভের বদলে এক কোটি ৩৭ লাখ লোকসান করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ ২০১৭ সালে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৮১ লাখ টাকায়। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান হয়েছে জেড ক্যাটেগরিতে।
২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ারের মধ্যে পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৫৫.৫২ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া ৩৬.১৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বাকি ৮.৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। ২০১৬ এর ৩০ জুন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের কাছে শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৫৭.২৯ শতাংশ। পরবর্তীতে তারা ১.৭৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০