ফারুক আলম, লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলায় সবজি চাষ ও উৎপাদন ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ উপজেলাসহ তিস্তার চরাঞ্চলে সবজির উৎপাদন ক্রমেই বাড়ছে। চরসহ সব উপজেলাতেই প্রায় সব ঋতুতেই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হচ্ছে। বিশেষ করে দেশি জাতের মুলা, কুমড়া, আলুসহ বিদেশি জাতের স্কোয়াশ চাষেও সাফল্য পাচ্ছেন জেলার কৃষকরা।
জানা গেছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব বড় শহরে লালমনিরহাটের সবজি বাজার দখল করে আছে। কিন্তু ন্যায্য মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। বাজারে ভালো দাম থাকলেও মুনাফা পাচ্ছেন না তারা। পুরোনো অভিযোগই ফের জোরালো, মধ্যস্বত্বভোগীরা পকেটে পুরছেন লাভের বড় অংশ। এবার জেলায় এমনই আলোচনার জš§ দিয়েছে মুলা। জেলার মুলা চাষিরা জানিয়েছেন, দাম তো পাচ্ছেনই না, বরং বাধ্য হয়ে তা ফেলে দিতে হচ্ছে।
কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তারা জানান, এখন তারা তাদের ক্ষেত নতুন আবাদের জন্য পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পরবর্তী ফসল চাষের জন্য মুলার ক্ষেত পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ভালো ফল হলেও এবার তাদের মাত্র এক টাকা কেজিতেও মুলা বিক্রি করতে হয়েছে। আর এখন কেউ বিনা মূল্যেও নিচ্ছেন না। অনেকেই মূলা ক্ষেতে রেখেই জমি চাষ করছেন।
রকিব সরকার নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটে গেছে। কিন্তু যে কোনো সবজিই হোক না কেন, আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আবার প্রতি বছরই শুনি কোনো না কোনো সবজির কৃষক দাম পাচ্ছেন না কৃষক, আবার বাজারে দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে। এখন শুনছি মুলা ফ্রিতেও কেউ নিচ্ছে না। অথচ বাজারে চার-পাঁচ টাকা কেজি দরেই কিনতে হচ্ছে।’
এমন অবস্থার কথা অনেকটা স্বীকার করে নিচ্ছে জেলা কৃষি দপ্তরও। জেলা কৃষি দপ্তরের উপ-পরিচালক আশরাফ আলী বলেন, ‘আমরা সব সময় বাজার এবং সময় অনুযায়ী সবজি চাষের পরামর্শ দিয়ে আসছি। সময় মতো সবজি চাষ করতে না পারলে বাজারদর হারাতে হয়। আমরা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সবজি রক্ষণাগারের জন্য সুপারিশ করেছি। প্রথম দিকে মুলা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে সমস্য তাতে আমরা কী করতে পারি? আমারা কৃষক পর্যায়ে উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছি। জেলার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী দপ্তরগুলোকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কৃষক যে ফসল উৎপাদন করেন, তা ক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছাতে অনেকগুলো চক্র কাজ করে। এই মধ্যভাগের কাছে বিরাট একটি লাভের অংশ চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কৃষকের উৎপাদিত ফসল রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে তারা লাভবান হবেন।’