নিজস্ব প্রতিবেদক : লোডশেডিংয়ের মতো সিদ্ধান্তের কারণে সরকারকে ক্ষমতা হারাতে হতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে কুইক রেন্টালের নামে এত চুরি করার পরেও যদি লোডশেডিং হয়, আমার তো মনে হয় এই লোডশেডিংই সরকারের ক্ষমতা ত্যাগের কারণ হতে পারে। এভাবে মানুষ কিন্তু অসহিষ্ণু হচ্ছে, সাধারণ মানুষ অসহিষ্ণু হচ্ছে। গতকাল সোমবার ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির রমনা থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং শাহবাগ থানার ২১নং ওয়ার্ডের সম্মেলনে মির্জা আব্বাস একথা বলেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সংকটে হিমশিম খাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশেও বিদ্যুতের লোডশেডিং দেয়াসহ ডলার সাশ্রয়ে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার উন্নয়নের ট্যাবলেট খাওয়াচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষকে। বিদ্যুতে লোডশেডিং করবেন আর উন্নয়নের কথা বলবেন। উন্নয়নের ট্যাবলেট বেশি দিন খাওয়ানো যাবে না।
‘উন্নয়নের ট্যাবলেট খাইতে খাইতে এখন শ্রীলঙ্কা বমি কইরা দিছে, শ্রীলঙ্কা কিন্তু এখন উন্নয়নের ট্যাবলেট খায় না। সেখানে খালি উন্নয়ন বলতে বলতে সব শেষ করে দিয়ে এখন চাকরি-বাকরি গোল কইরা দেশের রাষ্ট্রপতি ভাইগা চইলা গেছে সিঙ্গাপুরে। আপনাদের যাওয়ার জায়গা আছে অবশ্য। ঠিকানা বলতে হবে না, আপনার ঠিকানা আগেই করা আছে।’
বর্তমান সংকটজনক পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের উৎপাদন কমাতে চাইলেও তা নিয়ে বিএনপি নেতাদের সমালোচনার অধিকার নেই বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন। কারণ বিএনপির শাসনামলে লোডশেডিং ছিল প্রতিদিনের ঘটনা, যুক্তি দেখাচ্ছেন তারা।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ওই দিন বললেন যে, জনগণের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। কুইক রেন্টাল দিয়ে আপনারা বিদ্যুৎ দিয়েছেন, বিদ্যুতের আর অভাব নেই। এখন আবার বলছেন উল্টো কথা-লোডশেডিং করতে হবে। তাহলে এত টাকা দিয়ে কুইক রেন্টাল কেন করলেন?
‘যারা কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিক, তারা কিন্তু বসে বসে টাকাটা পাবেন; বিদ্যুৎ থাকুক বা না থাকুক, বসে বসেই টাকা পাবে তারা। এখন আমাদের প্রশ্ন তাহলে এত টাকা নিয়ে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট কেন করা হলো? এত টাকা নিয়ে পরিবেশ নষ্ট করে কেনো সুন্দরবনের রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হচ্ছে?’
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরুর দিনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের ‘তলোয়ার-রাইফেল’ সংক্রান্ত বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস। কুমিল্লার সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাংসদ বাহারকে ভোটের সময় এলাকা থেকে বের করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ‘ব্যর্থতার’ সমালোচনাও করেন তিনি। মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য এম এ হান্নানের পরিচালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধা ও মোশাররফ হোসেন খোকন।