Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:44 pm

লোহিত সাগরে হুতিদের রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমান সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে প্রায় এক হাজার মাইল দূরে ইসরায়েলের দিকে লক্ষ করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপরেও হুতি গোষ্ঠী হামলা চালাচ্ছে। গতকাল সোমবারই এক রাসায়নিক বা তেলবাহী ট্যাংকার জাহাজের ওপর ড্রোন ও জাহাজবিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তারা হামলা চালিয়েছে।

হুতির মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারেনা বলেন, জাহাজের আরোহীরা বার্তার জবাব না দেয়ায় হামলা চালানো হয়েছে। হুতিরা ইসরায়েলগামী সব জাহাজের ওপর হামলার হুমকি দিয়ে আসছে। তাদের মতে, গাজায় প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত না করলে এমন হামলা চালিয়ে যাওয়া হবে। এমন হুমকির মুখে অনেক বড় জাহাজ কোম্পানি লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, দক্ষিণ লোহিত সাগরে ইউএসএস ম্যাসন (ডিডিজি ৮৭) নামের মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইয়েমেনের হুতিদের ছোড়া জাহাজবিধ্বংসী একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করে।

সেন্ট্রাল কমান্ড আরও বলেছে, লোহিত সাগরের সংশ্লিষ্ট এলাকায় থাকা ১৮টি জাহাজের কোনোটির কোনো ক্ষতি হয়নি। কারও আহত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়নি।

সেন্ট্রাল কমান্ডের তথ্যানুযায়ী, গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে এ নিয়ে লোহিত সাগরে জাহাজ নিশানা করে ২২ বারের মতো হামলার চেষ্টা চালাল হুতিরা।

হুতিদের এমন হামলা বৈশ্বিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুটকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। এই নৌরুট দিয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বৈশ্বিক বাণিজ্য হয়ে থাকে।

ইসরায়েলকে লক্ষ করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পাশাপাশি হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের জন্যও হুমকি হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার একাধিক দেশ যৌথভাবে লোহিত সাগরের দক্ষিণ প্রান্ত ও এডেন উপসাগরে টহলদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের সুরক্ষায় চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি বহুজাতিক নৌ টাস্কফোর্স গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র।

ইসরায়েলকে লক্ষ করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পাশাপাশি হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের জন্যও হুমকি হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার একাধিক দেশ যৌথভাবে লোহিত সাগরের দক্ষিণ প্রান্ত এবং এডেন উপসাগরে টহলদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি দেশটির অর্থ দপ্তরও হুতিবিরোধী পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। হুতিদের হামলায় অর্থায়নকারী একটি নেটওয়ার্কের ওপর গতকাল বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, এ হামলায় প্রায় এক হাজার ১৪০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। সেদিন প্রায় ২৪০ জনকে ইসরায়েল থেকে ধরে নিয়ে জিম্মি করে হামাস।

হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২১ হাজার ৩২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই বেসামরিক জনগণ।