Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:54 pm

ল্যাবএইডে এক দিনে ৭০টির বেশি এন্ডোস্কপি, মানা হচ্ছে না নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা। রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পুরোপরি না জেনেই করা হয় সিটিস্ক্যান। চিকিৎসা ব্যয় নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

হাসপাতালটিতে দিনে ৭০টির বেশি এন্ডোস্কপি করানো হয়েছে। এই এন্ডোস্কপি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেতৃত্বে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালটিতে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তদের টিম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. মঈনুল আহসান এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরিদর্শন টিমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনও ছিলেন।

ডা. মঈনুল আহসান বলেন, ৭০টি এন্ডোস্কপি করানোর রেকর্ডও মিলেছে এই হাসপাতালে। ল্যাবএইডের নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছর অক্টোবরে এক দিনে ৭১টি এন্ডোস্কপি করা হয়েছে। এসব এন্ডোস্কপি মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেতৃত্বে করা হয়েছে। এমন অবস্থা প্রায় প্রতিদিনের। এছাড়া রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পুরোপরি না জেনেই করা হয় সিটিস্ক্যান।

এ ব্যাপারে কতখানি প্রটোকল মানা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ মন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব হাসপাতালকে প্রটোকল মেনে চিকিৎসা করাতে হবে। তা না হলে এসব বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে সরকার। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের এমন অভিযান চলবে বলে জানান মন্ত্রী।

অভিযানে নিজেদের ভুল মেনে নেয় ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ। ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. এ এম শামীম বলেন, ‘আমাদের কিছু বিষয়ে ত্রুটি ছিল। সামনে এমনটি আর হবে না।’

ল্যাবএইডের পরে স্পেশালাইজড হাসপাতাল পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেখানে গিয়েও মিলে অনেকটা একই চিত্র। এই চিকিৎসা ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তোলে অধিদপ্তরের টিম। সামন্ত লালকে সামনে পেয়ে এক রোগীর স্বজন এ নিয়ে অভিযোগ তোলেন।

বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর নামিদামি হাসপাতাল ঘুরেও কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে রোগীর সংখ্যার প্রতি গুরুত্বের চিত্রই সামনে এসেছে। সামনে এসেছে অবহেলার দিকটাও।

এন্ডোস্কপি, কোলনোস্কপির মতো পরীক্ষা করতেও রাজধানীর নামিদামি হাসপাতালে প্রায়ই ঘটছে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। এমনকি নজির রয়েছে মৃত্যুর। এসব অভিযোগ আমলে নেয়নি বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেশিরভাগ হাসপাতালে ঠিকঠাক প্রটোকল না মেনেই করা হয় এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা।