শক্তিমানের শেষকৃত্যে যাওয়ার সময় গুলিতে নিহত পাঁচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাঙামাটিতে নিহত নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে একটি মাইক্রোবাসে গুলি চালিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও আটজন আহত হয়েছেন।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সীমান্তের কাছ বেতছড়ি এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রাঙামাটি পুলিশ সুপার আলমগীর কবির জানিয়েছেন, গুলি বর্ষণের পর ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়েছেন। আহতদের খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে আরও দুজন মারা যান।
নিহতরা হলেনÑইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক) আহ্বায়ক তপনজ্যতি চাকমা বর্মা, জনসংহতি সমিতির সহযোগী সংগঠন যুব সমিতির (এমএন লারমা) মহালছড়ি শাখার সভাপতি সুজন চাকমা, সদস্য তনয় চাকমা ও রবিন চাকমা এবং মাইক্রোবাসের বাঙালি চালক সজিব। এর মধ্যে তপনজ্যোতি চাকমা, সুজন চাকমা ও তনয় চাকমা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। বাকি দুজন হাসপাতালে মারা যান।
পাবর্ত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও বাঘাইছড়ি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমা হতাহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।
জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) খাগড়াছড়ি জেলার রাজনৈতিক সম্পাদক বিভূরঞ্জন চাকমা বলেন, শক্তিমানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে সংগঠনের মোট ১২ জন নেতাকর্মী খাগড়াছড়ি থেকে ওই মাইক্রোবাসে করে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলেন। পথে বেতছড়ি এলাকায় পৌঁছালে তাদের গাড়িতে ব্রাশফায়ার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মোটরসাইকেলে করে নিজ বাসা থেকে উপজেলা পরিষদে নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার সময় গুলি করে হতা করা হয় শক্তিমান চাকমাকে সে সময় তার সঙ্গে থাকা জেএসএস (এমএন লারমা) নানিয়ারচর উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রূপম চাকমাও গুলিবিদ্ধ হন।
শক্তিমানকে হত্যার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করে তার সংগঠন। গতকাল পাঁচজনকে হত্যার ঘটনাতেও একই অভিযোগ করা হচ্ছে।
গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফর মিডিয়া উইং এর দায়িত্বে থাকা লিটন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে একক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য ইউপিডিএফ একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শক্তিমান চাকমা ও তপনজ্যোতি চাকমাসহ বাকিদের হথ্যা করা হয়েছে।
নিহত উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা ২০১০ সালে মন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি থেকে বেরিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) নামে গঠিত নতুন দলে যোগ দেন। তিনি ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ছিলেন।