শখের চা বাগানে সফল বদিউজ্জামান

লালমনিরহাটে চা শিল্পের প্রসার ঘটলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কেননা, চা শিল্পের জন্য যথেষ্ট উপযোগী দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলাটি। এখানে স্থানীয় চা বাগান মালিকদের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠেছে একটি প্রতিষ্ঠান। এতেই চা চাষের ওপর ঝুঁকে পড়ছেন স্থানীয় চাষিরা।
পরীক্ষামূলকভাবে চায়ের চাষ হয় হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব বিছনদই এলাকায়। ওই গ্রামের বদিউজ্জামান জীবিকার সন্ধানে একটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন চায়ের এলাকা পঞ্চগড়ে। সেখানকার চা বাগান মালিকদের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেখে নিজেও শখ করে চা গাছের চারা নিয়ে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন। সে শখই একদিন চা শিল্প গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখায় তাকে। স্বপ্নকে লালন করে সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে চলেছেন তিনি। তিনি সফল হলে দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। একই সঙ্গে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থারও ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।
একক প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা এই চা বাগান দেখে এ অঞ্চলের অনেকের আগ্রহ বেড়েছে। বদিউজ্জামান বলেন, চা বাগানে একবার চারা রোপণ করে পরিচর্যা করলে কম খরচে অনেক মুনাফা পাওয়া যায়। তাই তামাক চাষ ছেড়ে দিয়ে দুই একর জমিতে চা বাগান করেছি। স্বল্প পরিশ্রম ও কম খরচে অধিক মুনাফা পেতে চা চাষের বিকল্প নেই।
বর্তমানে লালমনিরহাটে টি প্রসেসিং কোম্পানি রয়েছে। ফলে চা বাজারজাত করা নিয়ে কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না তাকে। চা শিল্পের প্রসারে লালমনিরহাটে একটি চা বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে সীমান্তবর্তী এ জেলার পাঁচটি উপজেলায় ২০০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে চা বাগান। নতুন করে ৫০০ একর জমিতে চা বাগান করার প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানান সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফেরদৌস আলম। এসব বাগানের পাতা সংগ্রহ ও পরিচর্যা করে গ্রামীণ অনেক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামীণ বেকার জনগোষ্ঠীর কাজের সুযোগ তৈরি হওয়ায় নিজেদের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ অঞ্চলের প্রতি একর জমিতে চা উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সাত মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী বর্তমানে ২০০ একর জমিতে মোট এক হাজার ৪০০ টন চা উৎপাদন হচ্ছে। এই ২০০ একর জমিতে চা চাষি রয়েছেন ৭৫ জন। প্রথমদিকে এ অঞ্চলের চাষিদের উৎপাদিত চাপাতা বিক্রি হতো পঞ্চগড়ে। এত দূরে বিক্রি করতে চাষিদের পরিবহন খরচ মেটানোর পর খুব বেশি মুনাফা হতো না। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে যৌথ উদ্যোগে ফেরদৌস আলম নিজ গ্রামে গড়ে তোলেন সোমা অ্যান্ড সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেড নামে চাপাতা শোধনাগার।
বর্তমানে এ অঞ্চলের চাষিরা প্রতি কেজি ১৮ টাকা দরে সোমা টি প্রসেসিংয়ে কাঁচা চাপাতা সরবরাহ করছেন।

রাহেবুল ইসলাম টিটুল

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০