ক্রীড়া ডেস্ক: কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় আতঙ্কের নাম ছিল নিরাপত্তা ইস্যু। যে কারণে অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর পড়েছিল হুমকির মুখে। তবে সবকিছু দূরে ঠেলে আশার আলো দেখে ওই সিরিজটি। কোনো ঝামেলা ছাড়াই শেষও হয়। এরপর থেকেই টনক নড়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ)। ২০১৫ সালের অক্টোবরে না হওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি খেলার আগ্রহ দেখায় সিএ। গতকাল দেশটির ক্রিকেট বোর্ড নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষদিকে বাংলাদেশ সফরের কথা ভাবছেন তারা। তবে এখনও কিছু চূড়ান্ত নয়।
২০১৫ সালের অক্টোবরে দুটি টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু তার আগেই অস্ট্রেলীয় সরকার এক সতর্কবার্তায় বলেছিল, সফরের ওই সময়টি উগ্রবাদীদের অস্ট্রেলীয় ‘স্বার্থে’র ওপর জঙ্গি হামলার শঙ্কা রয়েছে। এরপর ২০১৬ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও দল পাঠায়নি অস্ট্রেলিয়া।
চলতি বছরই অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা নিয়ে গতকাল এবিসি রেডিওকে সাদারল্যান্ড বলেন, ‘সম্ভাবনা যথেষ্টই। আমরা দেখেছি গত বছরের শেষদিকে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিল। তাদের ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল যথেষ্ট উঁচুমানের। আমরা সে সময় আমাদের নিরাপত্তা প্রধান শন ক্যারলকে ৮-১০ দিনের জন্য বাংলাদেশে পাঠিয়েছিলাম। তিনি সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা নিয়েছিলেন।’
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় খুশি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। দেশটির নিরাপত্তা প্রধান শন ক্যারলের রিপোর্টেও রয়েছে সবুজসংকেত। যে কারণে বাংলাদেশ সফরে আসতে কোনো সমস্যা নেই অজিদের। তবে এখনই কোনো কিছু চূড়ান্ত নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সব সময় চোখ রাখছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। এমনটাই জানিয়েছেন সাদারল্যান্ড। ‘যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো কিছু ঘটে যেতে পারে। আমরা পরিস্থিতির ওপর টানা দৃষ্টি রাখব। তবে আমরা বাংলাদেশে যাচ্ছিÑএটি ধরে নিয়েই পরিকল্পনা করছি। বাংলাদেশ সরকার ও ক্রিকেট বোর্ড যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বলছে, সেটা আমাদের অবশ্যই স্বস্তির কারণ হয়ে আছে। এ মুহূর্তে আমাদের পরিকল্পনা বাংলাদেশে আমরা দুটি টেস্ট খেলব।’
হঠাৎ করেই ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করায় বেশ চাপে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে সবকিছুর আগে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার ব্যাপারটি এক নম্বরে। সাদারল্যান্ড বলেন, ‘যদিও বাংলাদেশ সফর নিয়ে অস্ট্রেলিয়া একটু চাপের মধ্যে আছে, তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার মানের ব্যাপারে আমরা কোনো ছাড় দেব না। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট হওয়ার পরই আমরা এ সফরে যাব। আমি মনে করি, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কাছে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তাই প্রধান বিবেচ্য বিষয়। আমরা এসব দেখেই পুরো বিষয়টি বিচার করব।’
সবশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০০৬ সালে ঘরের মাঠে টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০০৮ ও ২০১১ সালে দল দুটি শুধু ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর বদলে যাওয়া বাংলাদেশ একমাত্র অজিদের ছাড়া সব দলের সঙ্গেই খেলেছে। ম্যাচ থেকে সিরিজও জয় করেছে টাইগাররা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এখনও সেই স্বাদ পাওয়াটা বাকি রয়েছে মাশরাফি-মুশফিকদের। এবার অবশ্যই আসছে সাদা পোশাকের সিরিজে তেমন কিছুই চাইবে টিম বাংলাদেশ।