শততম টেস্ট দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে উঠবে মুশফিকরা?

ক্রীড়া প্রতিবেদক: দুঃস্বপ্নের মতো এখনও ঘুরে ফিরে সেই গল টেস্টের ময়নাতদন্ত চলছে। ২৫৯ রানের ক্ষতটাও যে এখনও ব্যথা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই দুঃখচাপা দিয়েই নামতে হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। ১৫ মার্চ কলম্বোর পিসারা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে লড়বে টাইগাররা। যা কিনা লাল-সবুজদের ইতিহাসের শততম টেস্ট। তবে সেই ঐতিহাসিক টেস্টের আগে গল ব্যর্থতা নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ শিবির।

প্রথমে নিউজিল্যান্ড, তারপর ভারত। এবার শ্রীলঙ্কা। বিদেশের মাঠে সেই একই গল্প। যেন ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিছুতেই পথ খুঁজে পাচ্ছেন না মুশফিকুর রহিমরা। অথচ প্রতিটি টেস্টেই সুযোগ আসছে। সেই সুযোগ কাজে লাগানো হচ্ছে না। গলে শেষ দিনে ড্রয়ের স্বপ্ন দেখেছিল টাইগাররা। হাতে দশ উইকেট, গোটা একটা দিন আটকে দিতে পারলেই ড্র। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে সেই ইস্পাত-কঠিন দৃঢ়তা কোথায়? ব্যাটসম্যানদের

একের পর এক আত্মাহুতি! শেষ পর্যন্ত ১৯৭ রানেই শেষ ২য় ইনিংস।

ম্যাচের শেষ দিনে গত পরশু ৪৫.২ ওভারের মধ্যে ১৩০ রান তুলতে ১০ উইকেট হারায়

টাইগাররা। ১৩ ওভারের মধ্যে ৩৭ রানে বিদায় নেয় পাঁচ ব্যাটসম্যান।

আগের টেস্টগুলোতেও ঠিক এভাবেই ভুলের পর ভুল করেছে টাইগাররা। কেন এমন হচ্ছে? টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম যেমনটা বলছিলেন, ‘দেখুন, গলে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং খারাপ করে ৩০০ করেছি। কিন্তু ২য় ইনিংসে সেটা হলো না। তাছাড়া সর্বশেষ দুটি সিরিজেই ম্যাচ ড্র করার সুযোগ ছিল। গলে শেষ দিনে ৯৮ ওভার ব্যাটিং করলেই তো হতো। কিন্তু আমরা পারিনি। আমাদের এমন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার স্কিল কিংবা মানসিকতা যাই বলুন সেটা আছে। তবে  ঠিক সময়ে সামর্থ্যরে প্রমাণ দিতে পারছি না আমরা।’

সাকিব, তামিমদের মতো অভিজ্ঞরাও সেই একইভাবে বারবার ভুল করে যাচ্ছেন। মুশফিক মনে করেন সাফল্য পেতে হলে সবাইকে সেই ভুলের ফাঁদ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আর সেই যুদ্ধটা শুরু হতে পারে আগামী বুধবারই। এ দিনই স্মরণীয় সেই শততম টেস্ট শুরু।

এরই মধ্যে গল থেকে কলম্বো চলে গেছেন মুশফিকরা। দলের জন্য সুখবর ফিটনেস টেস্টে পাস করে বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।

সেই ভেন্যু পি সারা ওভালে অবশ্য বাংলাদেশের রেকর্ড তেমন ভালো না। এই মাঠে খেলা তিনটি টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে লাল-সবুজরা। দুঃখজনক হলেও সত্য এই মাঠে ইনিংস হারের ঘটনা এই তিনটিই!

এখানে ২৫.২ ওভারে মাত্র ৬২ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। মোট ৬ ইনিংসের মধ্যে কেবল একবার দুইশ ছাড়ানো ইনিংস পায় দল। ২০০৭ সালে এখানে বাংলাদেশ তাদের সর্বশেষ ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৯ রান করেছিল। যা কেবল অনুপ্রেরণার উৎস।

এদিকে এই টেস্ট ম্যাচটাকে স্মরণীয় করতে চায় শ্রীলঙ্কাও। তাদেরও রয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। বোর্ড প্রধান থিলাঙ্গা সামাথিপালা জানালেন, শততম ম্যাচ খেলা দুই দলের ক্রিকেটারদের দেওয়া হবে ‘বিশেষ’ পদক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু দেশ। তারা আমাদের দেশে শততম টেস্ট খেলবে। এমন একটি ম্যাচ আয়োজন করতে পেরে খুবই খুশি আমরা।’

শততম টেস্টটি দেখতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধি দল থাকবে পি সারা স্টেডিয়ামে। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে দুই দেশের বোর্ড প্রধানের সামনে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। সেখানেই দুই দলের মেডাল দেওয়া হবে। ম্যাচ উদযাপন করতে দলের জন্য একটি ডিনারের আয়োজনও করা হবে।

এই ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও আছে বেশ কিছু পরিকল্পনা। জানা গেছে প্রতিটি ক্রিকেটারকে বুধবারই দেওয়া হবে বিশেষ ক্যাপ ও স্মারক ক্রেস্ট। সব মিলিয়ে এই ম্যাচে অন্তত ঘুরে দাঁড়ানোর অনেক অনুসঙ্গ পাবেন মুশফিকরা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০