শেয়ার বিজ ডেস্ক : তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। আগামী শনিবার তিনি শপথ গ্রহণ করতে পারেন। গতকাল বুধবার সকালে একটি সূত্র ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভিকে এই তথ্য জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে কংগ্রেস নেতা ও ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পর মোদিই হতে যাচ্ছেন ভারতের একমাত্র নেতা, যিনি টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
২০১৪ সালের নির্বাচনে ২৮২টি আসন পেয়েছিল মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি। আর ২০১৯ সালে পেয়েছিল ৩০৩টি আসন। এবার ২৪০টি আসন জিতেছে দলটি, যেখানে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে একটি দলের ২৭২টি আসন প্রয়োজন।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় মোদির দল সরকার গঠনের জন্য এখন এনডিএ জোটের ওপর নির্ভরশীল।
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে লোকসভা আসন ধরে রেখেছেন মোদি। দেড় লাখের কম ভোটে কংগ্রেসের অজয় ??রায়কে পরাজিত করে এই আসনে তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন তিনি।
এবারের নির্বাচনে বিজেপি ৩৭০টি আসন এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ চারটিরও বেশি আসন পাবে, এমন একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন মোদি। তবে বিরোধী জোট কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ‘ইন্ডিয়া’ তাদের সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। গত দুই নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়া কংগ্রেস এবার অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বিজেপির দিল্লি সদর দপ্তরে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন মোদি। তিনি বলছিলেন, ভারতের জনগণ তৃতীয়বারের মতো এনডিএ জোটকে ‘বিশ্বাস’ করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এই ভালোবাসার জন্য জনগণের কাছে আমার প্রণাম। আমি আশ্বস্ত করছি, জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে গত দশকে করা ভালো কাজগুলো আমরা অব্যাহত রাখব।’
ওই পোস্টে জোটভুক্ত রাজনীতিবিদ তেলুগু দেসম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু এবং জনতা দলের (ইউনাইটেড) নেতা নীতীশ কুমাররের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন মোদি। বিজেপির এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার কারণে এনডিএ জোটভুক্ত এই দুই নেতাকে এখন ‘কিংমেকার’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নাইডুর টিডিপি দলে লোকসভার ১৬ ও নীতীশ কুমারের জেডিইউতে ১২ সংসদ সদস্য রয়েছেন।
এনডিএ যদি জোটের এই ২৮টি আসন হারিয়ে ফেলে তবে তাদের মোট আসনসংখ্যা ২৯৩ থেকে ২৬৫-তে নেমে আসবে। কংগ্রেস যদি এই দুই নেতাকে তাদের জোটে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়, তবে তা মোদি ও বিজেপির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিজেপিতে যোগ দেয়ার জন্য ফেব্রুয়ারিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে কংগ্রেস ত্যাগ করেন নীতীশ কুমার। আর চন্দ্রবাবু নাইডু এর আগে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স জোটে ছিলেন।
এদিকে সূত্র জানিয়েছে, নাইডু ও নীতীশ কুমার উভয়কে জোট গঠনের আহ্বান জানানোর বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখছে কংগ্রেস ও ‘ইন্ডিয়া’ জোট। তবে এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে কংগ্রেস। যদিও জোটের জ্যেষ্ঠ নেতারা পরামর্শ দিয়েছেন, এটি একটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ হতে পারে।