শফিউল-রুশোর নৈপুণ্যে খুলনার হ্যাটট্রিক জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক : জয়ের খোঁজে থাকা রংপুর রেঞ্জার্সের শুরুটা দুর্দান্ত এনে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। কিন্তু শফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ আমিরের বোলিংয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ায় খুলনা টাইগার্স। পরে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় রাহমানউল্লাহ গুরবাজ শুরুটা করেন উড়ন্ত। সে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মুশফিকুর রহিমের দলকে সহজেই ৮ উইকেটে জেতান রাইলি রুশো। এর ফলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দলটি হ্যাটট্রিক জয়ের আনন্দে মাতে। টুর্নামেন্টে শুধু তারাই এখনও হারেনি কোনো ম্যাচ। রংপুর হেরেছে চার ম্যাচের সবকটি।    

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং উইকেটে গতকাল টস হেরে টুর্নামেন্টে শুধু তারাই এখনও হারেনি কোনো ম্যাচ। রংপুর হারল চার ম্যাচের সবকটি। রংপুর করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৭ রান। জবাব দিতে নেমে খুলনা ৪৫ বল আর ৮ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। রাইলি রুশো ৩১ বলে ৬৪ রান করেন। এদিকে রাহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ৩৭ রান।

রান তাড়ায় গতকাল খুলনা শুরুতেই নাজমুল হোসেন শান্তকে হারিয়ে বিপদে পড়েছিল। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাহমানউল্লাহ গুরবাজ ঝড় তুলে সে ধাক্কা কাটিয়ে তোলেন। যার শুরুটা তিনি করেছিলেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মুকিদুলের প্রথম ও শেষ বলে ছয় হাঁকিয়ে। এক ওভার পর মোহাম্মদ নবীর করা তৃতীয় বলে চার ও শেষ বলে ছয় হাঁকান তিনি।  

দ্বিতীয় উইকেটে গুরবাজকে যোগ্য সঙ্গ দেন রাইলি রুশো। দক্ষিণ আফ্রিকার এ তারকা ইনিংসের ৫ম ওভারে আরাফাত সানিকে চারটি চারে স্বাগত জানান। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে রুশো হাঁকান দুটি ছয় ও একটি চার। সে ধারাবাহিকতায় জুটিতে তারা তোলেন ২২ বলে ৫০ রান। এরপরই মুকিদুল ইসলামের লেগ স্ট্যাম্পে করা বলে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় সীমানায় মোস্তাফিজের ক্যাচে ফেরেন রাহমানউল্লাহ। তার আগে আফগানিস্তানের এ ওপেনার করেন ২২ বলে ১ চার ও ৪ ছয়ে ৩৭ রান। 

গুরবাজ ফিরে গেলেও রান তোলায় কখনও পেছনে পড়েনি খুলনা। তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে লক্ষ্যের পেছনে দ্রুতই ছুটতে থাকেন রুশো। সে ধারাবাহিকতায় এ বাঁহাতি মাত্র ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। সে সময় তার ইনিংসটি সাজানো ছিল সাতটি চার ও দুটি ছয়ে। পরে তার ব্যাটে ভর করে সহজেই জিতে খুলনা। রুশো শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৯ চার ও ২ ছয়ে ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। এদিকে মুশফিকের অন্য প্রান্তে অপরাজিত ছিলেন ১৭ বলে ২ চারে ১৭ রান। 

এর আগে রংপুরের শুরুটা দারুণ এনে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। মোহাম্মদ আমিরকে শুরুতেই এ বাঁহাতি দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভে চার হাঁকান। পরে তার ব্যাট থেকে ওই ওভারেই আসে আরেকটি চার। পরে ওভারে রবি ফ্রাইলিঙ্ককে টানা দুটি চারে স্বাগত জানান আরেক ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ। কিছুক্ষণ পরই অবশ্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এ জুটি শাহাজাদকে তুলে নিয়ে ভাঙেন আমির।

শাহজাদ ফেরার দুই ওভার পরই ক্যামেরন দেলপোর্তের উইকেট তুলে নেয় খুলনা। সে সময় শফিউল ইসলামের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড উইকেটে সামসুর রহমান শুভর দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন তিনি। নিজের পরের ওভারে শফিউল ফেরান নাদিফ চৌধুরীকে। এরপর নাঈম ও ফজলে রাব্বির জুটি এগিয়ে নেয় রংপুরকে। কিন্তু ৩২ বলে ৩৯ রানের জুটি শেষ হয় নাঈমের রান আউটে। তার ৪৯ রানের ইনিংসে পাঁচ চারের সঙ্গে ছিল দুই ছয়।

রংপুরের অধিনায়ক আবারও ব্যর্থ হন। তবে ফজলে মাহমুদের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের দলকে কিছুটা টেনে নেন লুইস গ্রেগোরি। তবে শফিউল-আমিরদের সৌজন্যে শেষেও খুব বেশি রান করতে পারেনি দলটি। শেষ পর্যন্ত রাব্বি ৪২ রানে ফিরে যান। ২০ বলে ২২ রানে ফেরেন গ্রেগোরি।

খুলনার সফল বোলার শফিউল। এ পেসার ২১ রানে নেন ৩টি উইকেট। এদিকে মোহাম্মদ আমির ২৪ রানে নেন দুটি উইকেট। এছাড়া শহিদুল ৩২ রানে দুটি উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন শফিউল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৩৭/৯ (শাহজাদ ১১, নাঈম ৪৯, দেলপোর্ত ৪, নাদিফ ০, ফজলে মাহমুদ ৪২, নবি ৪, গ্রেগোরি ২২, তাসকিন ২, মোস্তাফিজ ০, সানি ১*; আমির ৪-০-২৪-২, ফ্রাইলিঙ্ক ১-০-৯-০, মিরাজ ৪-০-২৫-০, শফিউল ৪-১-২১-৩, শহিদুল ৩-০-৩২-২, রবিউল ৪-০-২৫-০)।

খুলনা টাইগার্স: ১২.৩ ওভারে ১৩৮/২ (শান্ত ১, গুরবাজ ৩৭, রুশো ৬৬*, মুশফিক ১৭*; মোস্তাফিজ ২-০-১৮-১, মুকিদুল ৩-০-২৮-১, নবী ২-০-২১-০, সানি ২.৩-০-২৮-০, তাসকিন ৩-০-৩৯-০)।

ফল: খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যাচসেরা: শফিউল ইসলাম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০