নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামি শরিয়াহ্ভিত্তিক উইং খোলার অনুমতি পেয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ (বিডি) ফাইন্যান্স লিমিটেড। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শরিয়াহ্ভিত্তিক শাখা খোলার অনুমতি পেল বিডি ফাইন্যান্স। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ইসলামি শরিয়াহ্ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ (বিডি) ফাইন্যান্স লিমিটেড। আর এই কোম্পানিটির প্রিন্সিপাল শাখা, বংশাল শাখা, উত্তরা শাখা, গাজীপুর শাখা, চট্টগ্রাম শাখা এবং যশোর শাখায় শরিয়াহ্ভিত্তিক সেবা প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে কোম্পানির নিবন্ধিত সংঘ-স্মারক সংশোধনপূর্বক ইসলামি শরিয়াহ্ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনাকে কোম্পানির অন্যতম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য হিসেবে সংযুক্ত করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স। একইসঙ্গে কোম্পানির নিবন্ধিত সংঘ-বিধি সংশোধনপূর্বক একটি স্বতন্ত্র শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটি গঠন এবং কমিটি পরিচালনার জন্য বোর্ড কর্তৃক উপধারা অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া ইসলামি শরিয়াহ্ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে একটি পৃথক ইসলামি অর্থায়ন বিভাগ গঠন করা হয়েছে এবং ইসলামি ফাইন্যান্সিংয়ে নিযুক্ত জনবলকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদ তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও তহবিলে বৈচিত্র্য আনতে গত বছরের শেষের দিকে জিরো কুপন বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল। ‘ফার্স্ট জিরো কুপন বন্ড’ নামে ওই বন্ডের আকার ছিল ২০০ কোটি টাকা। বন্ডটির বৈশিষ্ট্য ছিল সেটি রূপান্তর অযোগ্য ও পুরোপুরি অবসায়নযোগ্য। এর প্রতি ইউনিটের মূল্য ১০ লাখ টাকা। মেয়াদ তিন বছর। ডিসকাউন্ট রেট সাত শতাংশ থেকে সাড়ে সাত শতাংশ (বার্ষিক)। ম্যান্ডেটেড লিড অ্যারেঞ্জার সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড ও ট্রাস্টি সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটি লিমিটেড।
তবে সম্প্রতি ডিএসইতে দেয়া এক ঘোষণার মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের ঘোষিত ওই বন্ড ইস্যুর আবেদন প্রত্যাহার করা হবে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানিটি ২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৭৭ কোটি ৫৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১২১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৭ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ৩৮৪টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক ৮৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৫১ দশমিক ৮৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর এক দশমিক ৪৬ শতাংশ বা ৮০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৫৫ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৫৫ টাকা ৭০ পয়সা। দিনজুড়ে তিন লাখ এক হাজার ৪৩৪ শেয়ার ৩৬৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর এক কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৫৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ২৫ টাকা থেকে ৭৩ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ছয় শতাংশ নগদ ও ছয় শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৮০ পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৮৬ পয়সা। আর এই হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে তিন টাকা ৭৯ পয়সা।
এর আগে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ১২ পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৩৭ পয়সা, আগের বছর একই সময় যা ছিল যথাক্রমে এক টাকা ৬৮ পয়সা ও ১৫ টাকা ২৫ পয়সা।