নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈধভাবে প্রতিবার একজন প্রবাসীর পাঠানো সর্বোচ্চ এক হাজার ৫০০ ডলার রেমিট্যান্সের ওপর দুই শতাংশ হারে নগদ সহায়তা বা প্রণোদনা পাওয়া যাবে। প্রণোদনা দেওয়া হবে প্রযোজ্য বিনিময় হারে। অর্থাৎ রেমিট্যান্সের অর্থ টাকায় রূপান্তর করে ওই অর্থের ওপর দুই শতাংশ হারে প্রবাসীদের স্বজনদের বা উপকারভোগীদের তাৎক্ষণিক দেওয়া হবে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় পরিচালিত বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ বা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে এ প্রণোদনা পাওয়া যাবে। গত মঙ্গলবার বাংলদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশে কার্যরত সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়, একজন প্রবাসীর রেমিট্যান্সের ওপর প্রতিবারে সর্বোচ্চ দেড় হাজার ইউএস ডলার বা সমমূল্যের অর্থের ওপর প্রণোদনা পেতে কোনো ধরনের কাগজপত্র প্রদান করতে হবে না। এর বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রাপককে রেমিট্যান্স প্রেরকের বৈধ কাগজপত্র (পাসপোর্টের কপি, বিদেশি নিয়োগদাতা কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগপত্রের কপি বা বিএমইটি প্রদত্ত সনদপত্রের কপি, ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি প্রভৃতি) রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংক শাখায় দাখির সাপেক্ষে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে।
বিধিবহির্ভূতভাবে নগদ সহায়তা গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে পরবর্তীতে ওই প্রাপক বা প্রাপকরা এ সুবিধা প্রাপ্য হবে না। বিধিবহির্ভূতভাবে প্রদত্ত অর্থ প্রাপকের কাছ থেকে আদায় করা হবে। রেমিট্যান্সের প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা প্রদানের সুবিধার্থে ব্যাংকগুলোকে ইমপ্রেস্ট আগাম আকারে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তহবিল সরকারি বরাদ্দ থেকে প্রদান করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত এক বছরের প্রবাসী আয় আহরণের গড় মাসিক অঙ্কের ভিত্তিতে তিন মাসের জন্য প্রয়োজনীয় নগদ সহায়তার অনুমিত পরিমাণে ওই তহবিল ব্যাংকগুলোকে দেওয়া হবে। ব্যাংকগুলো বিগত বছরের একই সময়ে পরিশোধিত রেমিট্যান্সের পরিমাণের সঙ্গে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে তহবিল পাবে। কোনো ব্যাংকের তহবিল শেষ হলেও তার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রণোদনা প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। পরবর্তীতে সরকার ওই পরিমাণ অর্থ পুনর্ভরণ করবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, রেমিট্যান্স প্রাপকের অনুকূলে নগদ সহায়তা প্রদানে দেরি বা হয়রানি করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নীতিমালায় বলা হয়, রেমিট্যান্সের প্রাপকের ব্যাংক হিসাব যদি রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংকের না থাকে তাহলে ওই প্রাপকের হিসাবে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য বিইএফটিএন, আরটিজিএস, এনপিএসবি বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠাবে আহরণকারী ব্যাংক।
সুবিধাভোগীর মোবাইল ফোনে রেমিট্যান্সের টাকা জমা হওয়ার বার্তা বা লেনদেনের রশিদ প্রদান করতে হবে আহরণকারী ব্যাংকের। ওই বার্তা বা রশিদে সরকার প্রদত্ত নগদ সহায়তার পরিমাণ আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হবে। দেড় হাজার ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এলে রেমিট্যান্স নেওয়ার দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে না পারলে পরবর্তী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তা উপস্থাপন করলে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে।