শর্ত ভাঙায় ৩ কোম্পানির সঙ্গে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের চুক্তি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: শর্ত ভাঙায় তিনটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক পরিদর্শন শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চুক্তি বাতিল হওয়া কোম্পানিগুলো হলোÑটিক্কোন সিস্টেমস লিমিটেড, ডেটা সফট ও মেট্রোনেট। এগুলোর পরিবর্তে কনা সফট, মা এন্টারপ্রাইজ ও মামুনুরকে পার্কের জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এর আগে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি পরিদর্শনের সময় সোলারিশ ভবন অডিটোরিয়ামে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজনে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বাইরে যেন দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে না হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে হাই-টেক কর্তৃপক্ষের কাঠামো ভেঙে বাইরে থেকে নিয়োগ দেয়া হবে।’

হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ৮২টি প্রতিষ্ঠানের নামে জমি বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এখানে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে এই পার্ক থেকে আইটি পণ্য রপ্তানি শুরু হয়েছে। সব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পূর্ণোদ্যমে চালু হলে এক বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

হাই-টেক সিটির ভেতরে ফোর টায়ার জাতীয় ডেটা সেন্টারে কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারকে বড় বিনিয়োগ করতে হয়েছে  ডেটা সেন্টারে। আর এই বিনিয়োগ ঋণ নিতে হয়েছে বিদেশ থেকে। তাহলে এই ডেটা সেন্টার থেকে রিটার্ন আসতে হবে সরকারের কাছে। ডেটা সেন্টারের আয় দিয়ে পরিচালন ব্যয় খরচ করে ডেটা সেন্টার কোম্পানিকে লাভবান হতে হবে। ৭-৮ বছরের মধ্যে ব্রেক-ইভেনে আসতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার একটা টার্গেট আছে, জুনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করার। সে জন্য আমি সকাল থেকে দিন-রাত কাজ করছি। আপনারা যারা ৯টা থেকে ৫টার বেশি কাজ করতে আগ্রহী নন, তাদের স্বাধীনতা আছে আইসিটি বিভাগ ছেড়ে যাওয়ার। কাজ করতে না পারলে আইসিটি বিভাগ ছেড়ে দেন।’

হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কালিয়াকৈরে ৩৭০ একর জমিতে গড়ে ওঠা দেশের প্রথম ও সবচেয়ে বড় হাই-টেক পার্ক ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’। হাই-টেক পার্কের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ২৩৯ একরের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকার জন্য বরাদ্দযোগ্য ১১২ একর জমির বরাদ্দ শেষ হয়েছে।

অন্যান্য জমি লেক, রাস্তা, বনায়ন, পুকুর, প্রশাসনিক এলাকা, সার্ভিস এলাকা, হোটেল, শপিংমল, হাসপাতাল, স্কুল, খেলার মাঠ, ডরমিটরি ভবন, আবাসিক এলাকা, সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট, ই-ওয়াস্ট ম্যানেজমেন্ট প্লান্ট, বিনোদন এলাকা, বৈদ্যুতিক গ্রিড সাবস্টেশনসহ বিভিন্ন সোশ্যাল অ্যামেনিটিসের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে ও ব্যবহƒত হচ্ছে।

পার্ক ডেভেলপারের অধীনে ১৩১ একর জমির মধ্যে ৪৭ একর (৮৪ একর জমি বরাদ্দের অপেক্ষায় রয়েছে) জমি বরাদ্দ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। জমি বরাদ্দপ্রাপ্ত ৮২টি দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২টি ইতোমধ্যে অবকাঠামো তৈরি করে অফিশিয়াল, অপারেশনাল, উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেছে।

এছাড়া ১৮টি প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে ও ৪২টি প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো তৈরির কার্যক্রম শুরু করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজ করছে। এই পার্ক থেকে প্রতি মাসে ভাড়া (জমি ও স্পেস) বাবদ সরকারের ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০