রাহাতুল ইসলাম: বাংলাদেশে কুটির ও হস্তশিল্প খাতের পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এসব পণ্যের পরিচিতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক)। একই সঙ্গে বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সহায়তার উদ্দেশ্যে মেলার আয়োজন করেছে বিসিক। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে রাজধানীর মতিঝিলে বিসিক ভবনে রোববার পাঁচ দিনব্যাপী শরৎমেলা-১৪২৪ ও ত্রৈমাসিক কারুশিল্প প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। মেলা চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য উš§ুক্ত থাকবে। বিসিক আয়োজিত ৯৮তম মেলা এটি। তিন মাস পরপর বছরে চারবার এ মেলার আয়োজন করে বিসিক।
৫৬টি স্টলে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আকর্ষণীয় ও মানসম্পন্ন বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী নিয়ে চলছে এ মেলা। এখানে বিভিন্ন ধরনের পোশাক, নকশিকাঁথা, তাঁত ও জামদানি শাড়ি, বেডশিট, পাটজাত হস্তশিল্প, মধু, চামড়াজাত পণ্য, বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য, হাতে তৈরি বিভিন্ন রকমের আচার প্রভৃতি পণ্যের সমারোহ ঘটেছে। মেলায় উদ্যোক্তারা সাধারণত পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য আসেন।
তাঁত ও জামদানি শাড়ি
বাঙালি নারীর কাছে শাড়ি খুবই পছন্দের। তা যদি হয় তাঁত বা জামদানির, তাহলে তো কথাই নেই। মেলায় ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তাঁত ও জামদানি শাড়ি এনেছেন উদ্যোক্তারা। সর্বনিম্ন ৭০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব শাড়ি।
বেডশিট
ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে বিভিন্ন আসবাবপত্রের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এর মধ্যে খাট অতি গুরুত্বপূর্ণ। খাটের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে প্রয়োজন বেডশিট। এবারের মেলায় হাতে তৈরি নানা রঙের বেডশিটও পাওয়া যাচ্ছে। ৭৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে পণ্যটি।
নকশিকাঁথা
নকশিকাঁথার মতো দরকারি পণ্যও রয়েছে মেলায়। এক হাজার থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব নকশিকাঁথা। শিশুদের নকশিকাঁথা পাওয়া যাচ্ছে ১৬০ থেকে ২৪০ টাকায়।
চামড়াজাত পণ্য
এ মেলায় চামড়ার তৈরি নানা পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। পুরুষ, নারী ও শিশুদের নানা ধরনের ব্যাগ, ওয়ালেট, বেল্ট, ফোন কভার, ক্যারি ব্যাগ প্রভৃতি চামড়াজাত পণ্যের প্রতি ক্রেতাসাধারণের বেশ আগ্রহ রয়েছে।
মধু
বিভিন্ন ধরনের মধুও উঠেছে মেলায়। প্রতি কেজি সরিষা ফুলের মধু ৬০০, কালিজিরার মধু ৮০০ ও সুন্দরবনের মধু ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এখানে।
দেশব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প খাতের উন্নয়নে দীর্ঘদিন যাবৎ উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের সেবা-সহায়তা দিয়ে আসছে বিসিক। ওই খাতের উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটিয়ে উৎপাদন এবং আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা বিসিকের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে বিসিক কর্তৃক অন্য কাজের পাশাপাশি নকশা কেন্দ্রের মাধ্যমে ব্লক, বাটিক প্রিন্টিং, পুতুল তৈরি, স্ক্রিন প্রিন্টিং, প্যাকেজিং, বাঁশ-বেতের কাজ, পাটজাত হস্তশিল্প, চামড়াজাত পণ্য, ধাতবশিল্প, বুননশিল্প ও ফ্যাশন ডিজাইন প্রভৃতি ১২টি ট্রেডে এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ৪১৫ উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বিসিকের উদ্যোগে ৩৩ হাজার ১২৪টি নকশা উদ্ভাবন ও নমুনাকরণের পাশাপাশি মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে ১৭৩টি, শ্রেষ্ঠ ও দক্ষ কারুশিল্পী পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ২৭৫ জনকে।
Add Comment