স্বল্প পরিশ্রমে অধিক লাভের আশায় শসা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানের চাষিরা। পিছিয়ে নেই টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার চাষিরাও। অল্প সময়ে শসা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার মোকনা, পাকুটিয়া ও মামুদনগরের প্রান্তিক চাষিরা। উচ্চ ফলনশীল জাতের হাইব্রিড আলাভী ৩৫ ও কাশিন্দা জাতের শসা চাষ করে এসব গ্রামের চাষিরা এখন স্বাবলম্বী।
কথা হয় বেটুয়াজানী গ্রামের চাষি রফিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি দুই বিঘা জমিতে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে শসা চাষ করেন। এরই মধ্যে ৩০০ মণ শসা বিক্রি করেছেন। আরও ২০০ থেকে ২৫০ মণ শসা বিক্রি হবে বলে দাবি করেন তিনি। এ এলাকার তার মতো অনেক চাষির সাফল্য দেখে উপজেলার অন্য গ্রামের চাষিরাও শসা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাই বেটুয়াজানীর পাশাপাশি লাড়–গ্রাম, পারবাইজোড়াসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে শসা চাষের প্রতি।
নবগ্রামের কৃষক সুকুমার রায় ও পার্শ্ববর্তী নরদহি গ্রামের বাদল মিয়া বলেন, আমরা স্থানীয় অন্য কৃষকদের মতোই সাধারণ ফসলের চাষ করতাম। তবে এখন উপজেলার কৃষি অফিসারদের পরামর্শ ও বাজারজাতকারী বিভিন্ন বীজ কোম্পানির তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন লাভজনক সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছি।
সুকুমার আরও বলেন, আমি এবার শসার সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে করলা চাষ করেছিলাম। লাভের মুখ দেখেছি।
বেটুয়াজানী গ্রামের চাষি রফিক মিয়া বলেন, আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসল আবাদ করলেও শসা চাষ করে যে সাফল্য অর্জন করেছি তা অবাক করার মতো। আমার শসা চাষ দেখতে অনেকেই আমার ক্ষেতে এলে চাষের পদ্ধতিসহ এর পরিচর্যার খুঁটিনাটি বিষয় বুঝিয়ে দেই অকৃপণভাবে। আগামী বছরগুলোয় এ এলাকার আরও অনেকে শসা চাষ করবেন বলে তিনি মনে করেন।
নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিএম রাশেদুল আলম বলেন, উপজেলার কৃষকরা সবজি চাষে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। আমাদের ব্লক সুপারভাইজারদের অনুপ্রেরণা, বিভিন্ন বীজ কোম্পানির পরামর্শ, সর্বোপরি আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ পেয়ে কৃষকরা এখন বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। উপজেলার ধলেশ্বরী নদীবিধৌত মোকনা ও পাটুটিয়ার কৃষকরা ক্ষতিকর তামাক চাষ বাদ দিয়ে করলা, টমেটো ও শসাসহ বিভিন্ন সবজি চাষে ঝুঁকছেন। এটি শুভ লক্ষণ। আর এ অঞ্চলের কৃষকদের সফলতা দেখে উপজেলার অন্য এলাকার কৃষকরাও সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
শাহরিয়ার সিফাত, টাঙ্গাইল