Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 3:00 am

শহরে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিন

 

দৈনিক শেয়ার বিজে গতকাল ‘বিবিএসের জরিপ: গ্রামের মানুষ ব্যাপকহারে আসছে শহরে’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, উন্নততর জীবন ব্যবস্থার সন্ধানে গ্রাম থেকে ব্যাপকহারে মানুষ শহরে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। যে বিষয়টি সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে উঠে এসেছে। শহরে মানুষের স্থানান্তর হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এমনকি সরকারও দেশের সব মানুষকে উন্নতর নাগরিক সেবা দেয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু যে হারে মানুষ শহরে আসছে, সে হারে সেখানে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি পাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নেয়া আবশ্যক।

প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭৪ সালে দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র আট শতাংশ শহরে বসবাস করতেন। ১৯৯১ সালে শহরে বসবাসকারীর মানুষের অনুপাত ২০ দশমিক ১৫ শতাংশে উন্নীত হয়। ২০১৪ সালে এটি উঠে আসে ২৯ শতাংশে। ২০২৫ সালে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শহরে বাস করবে বলে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে ২০২১-৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সময় দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই হবেন শহরের অধিবাসী। কাজেই সব মানুষকে নাগরিক সেবার আওতায় আনার বিষয়ে সরকারের যে লক্ষ্যমাত্রা তা বাস্তবায়নের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু শহরগুলোয় নাগরিক সেবা কতটা বৃদ্ধি পাচ্ছে সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে নগরে যেসব দরিদ্র মানুষের স্থানান্তর ঘটছে, তারা ভালোমানের বাসস্থান পাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মহল প্রশ্ন তুলেছে।

আমরা জানি, এরই মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ধূষিত শহরগুলোর তালিকায় প্রথম দিকে অবস্থান করছে ঢাকা। বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এ শহরে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিনিয়িত হাজারো মানুষ এ শহরে প্রবেশ করছেন। কিন্তু তাদের ধারণ করার মতো সক্ষমতা এ শহরের নেই। কাজেই ঢাকায় যে ধরনের নাগরিক পরিষেবাসমূহ উপস্থিত আছে, সে ধরনের সেবা দেশের অন্যান্য শহরেও প্রচলন করতে হবে। এতে ঢাকার ওপর চাপ কমবে এবং শহর আরও স্বাস্থ্যসম্মত হবে। এ বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি দেয়া আবশ্যক বলে মনে করি।

বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল একটি অর্থনীতির দেশ। এখানে দ্রুততার সঙ্গে শহর সম্প্রসারিত হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় কোনো ধরনের অপরিকল্পিত নগরায়ণের সম্প্রসারণ যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখা আবশ্যক। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।