শেয়ার বিজ ডেস্ক: আজ ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আলবদর, আলশামস মিলিতভাবে পরিকল্পনা করে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দু’দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২১ পালনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে পৃথক বাণী দেবেন। খবর: বাসস।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহিদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল ৭টা ২২ মিনিটে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে থেকে সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্য বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল ৮টায় মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে এবং সকাল ৯টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।
একাত্তরে ৩০ লাখ শহিদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারা শহিদ হন এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর আলবদরের সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। পরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়। এ দুটি স্থান এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আলবদর বাহিনী আরও অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আলবদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে হত্যা করে।
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক রশীদুল হাসান, ড. আবুল খায়ের, ড. মুর্তজা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান (লাডু ভাই), এএনএম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভীনসহ আরও অনেকে।