শাবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে নতুন করে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকালে সিলেট সার্কিট হাউসে বৈঠকে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন তারা। প্রতিনিধিদলের সদস্য শাহরিয়ার আবেদীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আন্দোলন শুরুর পর থেকে এসব দাবি আগে কখনও উপস্থাপন করেননি শিক্ষার্থীরা।

চার প্রস্তাব হলো, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার সহধর্মিণী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে শাবিপ্রবিতে ইমেরিটাস অধ্যাপক করা, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বাড়ানো ও সঠিক ব্যয় নিশ্চিতকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম চালু করা এবং শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পিএইচডিসহ ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মতামত যাচাই করা।

বিকাল ৩টায় সিলেট সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকে বসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল। মন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও উপস্থিত আছেন। এর আগে বেলা আড়াইটায় ক্যাম্পাস থেকে রওনা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল।

প্রতিনিধিদলে ছিলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন মারুফ, সাবরিনা শাহরিন রশীদ, সুদীপ্ত ভাস্কর অর্ঘ, শাহরিয়ার আবেদিন, আমেনা বেগম, মীর রানা ও জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব।

বৈঠকে যোগ দিতে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে প্লেনে করে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। দুপুর ১২টায় সিলেট সার্কিট হাউস মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

ঘটনার সূত্রপাত শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল নিয়ে। গত বছরের ২৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেয়া হয়। প্রায় ১৯ মাস পর ওইদিন থেকে হলে ফিরতে শুরু করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। ফেরার পর হলে তারা বিভিন্ন সংস্কার দেখতে পান। পাশাপাশি বেশকিছু নতুন নিয়মনীতি ও সমস্যার সম্মুখীন হন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের আবাসিক ছাত্রীরা।

এর পর থেকে হলের এসব নিয়মনীতি, সিট বণ্টন, খাবার সমস্যা, ওয়াইফাই সমস্যা, পানির সমস্যা এবং বাইরের হোস্টেলের ভাড়া নিয়ে দিন দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হল প্রভোস্ট বডির দূরত্ব বাড়তে থাকে। ছাত্রীদের অভিযোগ, এসব বিষয়ে অভিযোগ করে প্রভোস্ট বডির ‘অসদাচরণের’ শিকার হয়েছেন তারা।

এসব কারণে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকালে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

এরপর শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করে এতদিন আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। ২৬ জানুয়ারি টানা সাত দিনের অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০