সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম থাকতে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। এজন্য শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম অন্যতম অবলম্বন হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা তাই কায়িক ব্যায়ামের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
বিগত দুই দশকের চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিক জরাজীর্ণতা লাঘবের পাশাপাশি স্বাস্থ্যেরও উন্নয়ন ঘটায় পরিশ্রম। যদি কেউ ৬ সপ্তাহ নিয়মিত হাঁটে, দৌঁড়ায় ও অন্যান্য ব্যায়াম করে তবে তার রক্তচাপ কমে আসবে। অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে স্নায়ুও সতেজ হবে। শারীরিক কসরতে হƒদরোগ, স্ট্রোক, মানসিক স্বাস্থ্যসমস্যা, টাইপ টু ডায়াবেটিসে ঝুঁকি কমায়। শরীর চর্চার ফলে হাড়ে ক্যালসিয়াম জমে। হ্রাস পায় হাড়ের ভঙ্গুরতা।
ব্যায়ামের নিয়ম
যে কোনো বয়সী লোকই ব্যায়াম করতে পারে। তবে নিয়ম মেনে ব্যায়াম করা জরুরি। অন্যথায় ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ানোর আগে অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়া চিকিৎসার জন্য ব্যায়াম করতে ইচ্ছুক হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ব্যায়ামের ধরন
বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যায়াম রয়েছে
সহনশীলতা বাড়াতে
১. শরীরের সহনশীলতা বাড়াতে রয়েছে ব্যায়াম, যা রক্ত সঞ্চালন ও শ্বাসতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে জোরে হাঁটা সহনশীলতা বাড়ার জন্য ভালো।
২. সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো যেতে পারে। এ ধরনের ব্যায়াম ৩০ মিনিট ধরে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ দিন করতে হবে।
শক্তি বাড়াতে
শক্তি বাড়ার জন্য রয়েছে ব্যায়াম, যা শরীরের পেশিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন করতে হয়, এ ধরনের ব্যায়াম। এ জন্য ভার উত্তোলন শুরু করা যেতে পারে। খালি হাতের বিভিন্ন ব্যায়ামেও পেশিশক্তি বাড়ে।
মেদ কমাতে ব্যায়াম
মেদ জমে যাওয়ায় শরীরের আকারটাই বদলে যেতে পারে। এর সঙ্গে শরীরে বাসা করে বসতে পারে নানাধরনের রোগ। সুতরাং যাদের শরীরে মেদ জমে গেছে তাদের জন্য ডায়েট ও ব্যায়ামের সমন্বয় জরুরি। নিয়ম করে সকাল-বিকাল হাঁটা হতে পারে ভালো টোটকা। হাঁটাহাঁটি শুধু মেদ কমাতে নয়, সুস্থ স্বাভাবিক শরীরের জন্যও প্রয়োজনীয়। এতে মাংসপেশি সতেজ হয়। মন থাকে ফুরফুরে।
জেনে রাখা ভালো
হঠাৎ করে ব্যায়াম শুরু ও বন্ধ করা ক্ষতিকর। তাই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। শুরুতে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। এতে যদি শরীর অসুস্থ হয়ে যায়, তবে বিরতি দিন। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ান। ব্যায়াম শুরুর আগে কিছুক্ষণ হাঁটুন অথবা হালকা ওয়ার্মআপ করে নিন। ব্যায়াম শেষে ১০ মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটুন। কিছুদিন ব্যায়াম করে সুফল পাওয়ার পর ব্যায়াম ছেড়ে দিলে আবার শরীরের অবস্থা পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। সে জন্য সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম বুদ্ধিমানের কাজ।