শালবন বৌদ্ধবিহার বিশেষজ্ঞদের অনুপস্থিতিতে চলছে সংস্কার

মামশাদ কবীর, কুমিল্লা : কুমিল্লার ঐতিহাসিক লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ে আবিষ্কৃত শালবন বৌদ্ধবিহার ও রানী ময়নামতি প্রাসাদের খননকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণ প্রকল্পের অধীনে সংস্কারকাজ চলছে। অভিযোগ উঠেছে, বিশেষায়িত এ কাজ করার সময় উপস্থিত থাকছেন না কোনো প্রতœতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ।

দেশের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহাসিক সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে কুমিল্লার লালমাই-ময়নামতি পাহাড় এলাকায়। অষ্টম থেকে ১২তম শতাব্দীর বহু নিদর্শন রয়েছে এ পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানজুড়ে। বিগত শতাব্দীর ৫০ দশকের মাঝামাঝি প্রতœতত্ত্ব বিভাগ এ পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে খনন শুরু করে। এতে আবিষ্কৃত হয় প্রায় ৫০টি ঐতিহাসিক নিদর্শন। তবে ২৫টি নিদর্শন অক্ষত থাকলেও বাকিগুলো ধ্বংসের কারণে খননের আশা ছেড়ে দেয় প্রতœতত্ত্ব বিভাগ।

সম্প্রতি প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতর শালবন বৌদ্ধবিহার, ভোজবিহার, আনন্দ বিহার ও রানী ময়নামতি প্রাসাদ এলাকা সংস্কার শুরু করে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চলছে সংস্কারকাজ। এর মাঝে রানী ময়নামতি প্রাসাদ এলাকায় সীমানা প্রাচীর ছাড়াও ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে খননের ফলে আবিষ্কৃত গোপন রাস্তা, প্রথম নির্মাণ যুগের পাঁচটি দেয়াল ও পরবর্তীতে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ নির্মাণ যুগের প্রাচীরগুলোর সংস্কারকাজ হচ্ছে। একই সঙ্গে চলছে শালবন বৌদ্ধবিহারের খননের ফলে আবিষ্কৃত হওয়া প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের সংস্কারকাজ। কিন্তু কোনো প্রতœতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ উপস্থিত থাকেন না। শ্রমিকরা ইচ্ছেমতো করছেন কাজ।

প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতরের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতিক সময়ে রানী ময়নামতি প্রাসাদ এলাকায় দুই দফা খনন করা হয়। এ সময় উত্তর-পশ্চিম কোনে আবিষ্কৃত হয় একটি গুপ্ত পথ। এছাড়াও বেশ কিছু মাটির তৈরি পাত্রের ভগ্নাংশ। সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শালবন বৌদ্ধবিহার, ভোজবিহার, আনন্দ বিহার ও রানী ময়নামতি প্রাসাদের খননকাজে উšে§াচিত নিদর্শনের সংস্কারে হাত দেয় প্রতœতত্ত্ব বিভাগ। ঢাকার নিকুঞ্জ খিলক্ষেত এলাকার মেসার্স ঢালী কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে এখানে কাজ চলছে।

ময়নামতি রানী প্রাসাদ এলাকা সংস্কারকাজে নিয়েজিত শ্রমিকরা জানান, দৈনিক মুজুরি ভিত্তিতে তারা কাজ করছেন। অফিসাররা তাদের কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে চলে যান। এখানে ঠিকাদারের লোকজন থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ সময় তারা থাকেন না। সরেজমিন ঘুরে প্রতœতাত্ত্বিক, কর্মকর্তা বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল মোবাইল ফোনে জানান, তিনি কয়েকদিন হলো এসেছেন। এছাড়া কর্মস্থলে অনপুস্থিতির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান উম্মোচিত খননের সংস্কারকাজে বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড. সফিকুল আলম জানান, তার কাজে সরকার ভরসা করার কারণেই চাকরি শেষে আবারও এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। অনিয়মের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১