শিক্ষাবৃত্তির জন্য অনুদান দিতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: শিক্ষাবৃত্তির জন্য অনুদান দিতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে আরও বেশি শিক্ষার্থীকে সহায়তা করা যাবে।

গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের (পিএমইএটি) অধীনে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করে সরকার প্রধান এ কথা বলেন।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই আয়োজনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক বিত্তবান আছে। কিছু লোকের তো বেশ টাকা-পয়সা হয়ে গেছে। বিত্তবানরা যদি এই ট্রাস্ট ফান্ডে অনুদান দেয় তাহলে আমরা আরও বেশি করে ব্যবহার করতে পারব।’

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড থেকে এই তহবিলে অত্যন্ত দুই কোটি টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণাও দেন জাতির পিতার কন্যা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ছোট বোন শেখ রেহানার সঙ্গে আলোচনা করে এটা দিয়ে দেব। আমরা নিজেরাও বৃত্তি দিচ্ছি। এখানে দিতে পারলে নিজেদের একটু আত্মতৃপ্তি হবে।’

সমাজে ছড়িয়ে থাকা মেধাবীদের উঠিয়ে নিয়ে আসা সরাকারের মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে কারণে ট্রাস্টের মাধ্যমে বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি।’

এবার মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক এবং সমমানের ৬৪ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই হাজার ২০৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে।

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ২০২৪’-এর ১৫ শিক্ষার্থী এবং ২১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০২৩ সালের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ করেন।

‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ’ প্রতিযোগিতায় পুরস্কারপ্রাপ্ত ১৫ শিক্ষার্থীর প্রত্যেকেই দুই লাখ টাকা ও একটি সনদপত্র পেয়েছেন। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্ত ২১ শিক্ষার্থীর প্রত্যেকেই একটি সনদপত্র ও তিন লাখ টাকা করে পেয়েছেন।

শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পাঠ্যপুস্তক, পাঠ্যপুস্তকের কার্যপ্রণালি, শিক্ষাক্রম সবকিছু আমরা পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করছি।’

‘সৃজনশীল শিক্ষার ব্যবস্থা, মেধা অন্বেষণ, মেধার মাধ্যমে শিক্ষাকে আরও আপন করে নেয়া, শিক্ষাকে আনন্দ মুহূর্ত পরিবেশে করা, সেই পদ্ধতিতে আমরা আসতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘সারাক্ষণ যদি কেউ বলে পড়ো পড়ো পড়ো, এটা কি ভালো লাগে বলো? মোটেই ভালো লাগে না। যা একটু পড়ার ইচ্ছা থাকে সেটাও নষ্ট হয়ে যায়। এটা বাস্তব কথা। সেজন্য এমনভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েছি, যাতে ছেলেমেয়েরা আগ্রহ নিয়ে পড়ে। পড়ো পড়ো করতে হবে না, নিজেরাই পড়বে।’

বিএনপির সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি যেটা আমরা করে গিয়েছিলাম, ২০০১ সালে বিএনপি সেটা বাতিল করে দেয়। ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন আমাদের সুযোগ আসে আরও কাজ করার, শিক্ষা ও গবেষণা কাজে আমরা আরও বরাদ্দ বৃদ্ধি করি।’

২০১০ সালে আওয়ামী সরকার যখন বিনা মূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল, সেই অনেকের কাছে ‘অসম্ভব’ মনে হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমরা সে ‘অসম্ভব’ কাজকে সম্ভব করেছি। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চারশ ৬৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক আমরা বিনা মূল্যে বিতরণ করেছি। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ৩০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫৪টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কৃষি, ভেটেরিনারি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসা, ডিজিটাল, ইসলামি আরবি, এভিয়েশন, অ্যারো স্পেইস, বেসরকারি খাতে ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষা আমাদের কম ছিল, সেটা আমরা বাড়িয়েছি। বাজেটে শিক্ষা খাতেই সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়।’

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাঁপা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০