নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এখন টাকা দিলে পাস হয়ে যায়, টাকা দিলে চাকরি হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত বুধবার বেসরকারি শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের এক মানববন্ধনে যোগ দিয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলন পর্যন্ত করতে হয়েছে।’
দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষাব্যবস্থা দুর্নীতিপরায়ণ নাগরিক তৈরি করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘শুধু শিক্ষাব্যবস্থা নয়, সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি। স্বাস্থ্য খাত সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থায় পড়েছে। এই সরকার আসার পর পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সব খাতগুলোকে ধ্বংস করে একটা নতজানু রাষ্ট্রে, পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে এ মানববন্ধন হয়।
এর আগে দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। আমরা আগেই বলেছি, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার চিকিৎসা দরকার এবং সেই চিকিৎসা এ দেশে সম্ভব হচ্ছে না। আমরা বলেছি, যারা চিকিৎসক তারাও বলেছেন। যে টেকনোলজিতে তার চিকিৎসা করা দরকার, সে টেকনোলজি এখানে নেই। সুতরাং তাকে অবিলম্বে বাইরে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো দরকার। কী দুর্ভাগ্য আমাদের, জোর করে ক্ষমতা দখল করে যিনি দেশ চালাচ্ছেন তিনি বলেছেন, অনেক মানবতা দেখিয়েছি, আর কত মানবতা দেখাব। এটা কোনো সভ্য দেশের নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না। দুর্ভাগ্য আমাদের, যে নেত্রী তার সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কারাগারে গেছেনÑসেই নেত্রীকে আজকে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ ধরনের বক্তব্য কোনো সভ্য দেশের নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতি থেকে যখন জ্ঞান, রাজনীতি থেকে যখন উইজডম চলে যায় তখন সেখানে শুধু মাসেল, মানি এগুলো সামনে এসে দাঁড়ায়। তখন সেই রাজনীতি ফলপ্রসূ কিছু দিতে পারে না। জাতিকে তো কিছু দিতে পারেই না। এখানে শেখ হাসিনা সফল হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আশা করছি অবশ্যই এক দিন অন্ধকার কেটে যাবে। নতুন সূর্য উদয় হবে। অবশ্যই এক দিন চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মতো মানুষ আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবেন। অবশ্যই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন।
তিনি বলেন, আজকে আমাদের সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে ঐক্য। আমাদের গোটা জাতিকে আজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সব মানুষ, সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে এ যে একটা মনস্টার, দানব আমাদের সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে, সেই দানবকে পরাজিত করতে হবে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক কবি আব্দুল হাই সিকদারের সভাপতিত্বে ও শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেনÑবিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর-বিক্রম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শাহাজাদা মিয়া, ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের কন্যা চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।