শিক্ষায় নৈতিকতার বাস্তবায়ন হোক

আমাদের শিক্ষায় শিশুশিক্ষার কী পরিস্থিতি, সেটি এখন যথেষ্টভাবে চিন্তার কারণ। দেশে নানা ধরনের সিলেবাসের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। প্রাথমিক, ইবদেতায়ি মাদরাসা শিক্ষা, প্রাইভেট স্কুলশিক্ষা, শিশুকিশোর বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একদিকে বাংলা, ইংরেজি ও আরবি শিক্ষার ২টি ধারায় শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, পরিচালনা পদ্ধতি এবং সিলেবাস প্রণয়ন ভিন্ন ভিন্নভাবে আমরা দেখছি। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ভাষায় বাংলাদেশের শিশুশিক্ষা পরিচালিত হচ্ছে।

সরকারি পাঠ্যসূচি পাঠক্রমে ২০২৪ সালের শিক্ষা সিলেবাস নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচনা দেখছি। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সিলেবাসের মধ্যে ব্যাপক ধরনের ভুল ভ্রান্তি চোখে পড়েছে। ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অসচেতনতা অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে মন্দির গির্জার ছবি ইসলামিক পাঠ্যপুস্তকে বইয়ের কাভার পেজে ছাপানো হয়েছে। ফলে মুসলিম সমাজে ও অভিভাবকদের মধ্যে মন্দ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে দেশের আলেম সমাজ তাদের বক্তব্যের মধ্যে তীব্র প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। নতুন সরকার নতুন মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেছে। আগের শিক্ষা উপ-মন্ত্রীকে বর্তমানে পূর্ণভাবে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে ঢেলে সাজানোর কথাবার্তা বলছেন। অভিভাবক, শিক্ষাবিদ শিক্ষক সমাজ ও গুণীজনদের নিয়ে টোটাল শিক্ষাকার্যক্রমকে একটি গঠনমূলক অবস্থানে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বর্তমানে অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা মোটেও সন্তুষ্ট নয়। পরীক্ষা পদ্ধতি কাটছাঁট তুলে দেয়া ও পরীক্ষা না রাখার সিদ্ধান্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য মোটেও কল্যাণকর নয়। শিশু থেকে এসএসসি পর্যন্ত সব পর্যায়ে শিক্ষা সিলেবাসের মধ্যে পরীক্ষা পদ্ধতি থাকা চাই। পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মেধার মূল্যায়ন করতে হবে। মেধা যাচাইয়ের জন্য বই পড়া, শিখা, পরীক্ষা দেয়া, উত্তর লিখাÑসবকিছু শিক্ষার্থীর জন্য মেধা যাচাইয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসব বিষয়ে কাটছাঁট করে শিক্ষাকে সংকোচন মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। বিদ্যালয় শিক্ষার জন্য তৈরি হয়েছে।

সেখানে পড়বে শিখবে অনুশীলন করবে। পরীক্ষা দেবে, নিজেকে তৈরি করবে, চারিত্রিকভাবে জীবন গঠন করবে। ছাত্ররা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আগামী দিনের কর্ণধার। তাদের সিলেবাস নিয়ে, পড়ালেখা নিয়ে, পরীক্ষা পদ্ধতি এসব বিষয় নিয়ে উদাসীন থাকার কোনো সুযোগ নেই। আগামীর ভবিষ্যৎ তাদের জন্য আদর্শিক, নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয়ে শিক্ষা পদ্ধতি নতুন করে সাজানো হোক। ধর্ম বিদ্বেষী, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও নেশা জাতীয় সব ধরনের অনৈতিক শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীদের তৈরি করতে হবে।

আমাদের জাতীয় জীবনের পদে পদে আদর্শিক নাগরিকের পদ-পদবি পূরণ করার জন্য নৈতিকতা সম্পন্ন জাতির বিকল্প নেই। তাই স্কুলকে শিক্ষামুখী, পরীক্ষামুখী, জ্ঞান অর্জনমুখী হিসেবে রাখতে হবে। সব ধরনের অশ্লীল সংস্কৃতি কর্মকাণ্ড শিক্ষার নামে প্রচার ও অনুশীলন বন্ধ করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষার আদর্শে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস থেকে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা চাই। শিক্ষা সমাপ্তকারী স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি-বেসরকারি সব শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান করতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে, সঙ্গে শিক্ষিত লাখ লাখ বেকার সমাজকে কর্মসংস্থানের আওতায় এনে জাতীয় অর্থনীতিকে আরও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নেয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন চাই।

 

মাহমুদুল হক আনসারী

চট্টগ্রাম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০